সাইফুল ইসলাম
দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহর ফেনীতে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় রোগের প্রকোপ বাড়ছে ।বুধবার ( ২৫০ শয্যার ) ফেনী জেনালের হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়-হাসপাতালের ফ্লু-কর্নার, শিশুবিভাগে কোন শয্যাই খালি নেই। শয্যার অতিরিক্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বারান্দা ও করিডোরে। হাসপাতালটির শিশু বিভাগে গিয়ে কথা হয় নার্সিং ইনচার্জ নিলুফা সুলতানার সঙ্গে। তিনি জানান,বেশ কয়েকদিন ধরে শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবুও অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলিয়ে চিকিৎসক-নার্সরা সাধ্যানুযায়ী সেবা দিয়ে আসছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,শয্যা না পেয়ে বারান্দা ও মেঝেতেই অনেক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।শিশু ওয়ার্ড ও মেডিসিন ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগী গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীর চাপে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতর মেঝেতেও ফোম দিয়ে বাড়ানো হয়েছে শয্যা। ওয়ার্ডের ভেতরে স্থান না পেয়ে নিরূপায় হয়ে অনেক রোগীই চিকিৎসা নিচ্ছেন বারান্দায়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী, জেলার এ হাসপাতালটির ৩টি ওয়ার্ডে ৭৮ জন রোগীর স্থলে ২০৫ জন ভর্তি হয়েছেন।তাই বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে ওনারা কিছুটা হিমশিম খেলেও সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবী,আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে দিনে গরম, রাতের শেষ ভাগে শীত ও কুয়াশা পড়ার কারণে এসব রোগের প্রকোপ বাড়ছে। শিশু সন্তানকে নিয়ে আসা মর্জিনা আক্তার নামে এক নারী জানান, ৫/৬ দিন আগে তার মেয়ে ফারিয়ার জ্বর ও ঠাণ্ডা দেখা দেয়। স্থানীয় চিকিৎসকের ওষুধ খেয়ে কোনো কাজ হয়নি।সোমবার (১১ অক্টোবর) নিরুপায় হয়ে মেয়েকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য হন তিনি।তবে, শয্যা না থাকায় বারান্দাতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ফারিয়ার। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ইকবাল হোসেন ভূঞা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুধবার (১৩ অক্টোবর) এ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ৭৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়াও পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৫২ শয্যায় ১৩১ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।তিনি জানান,এই চিত্র বহির্বিভাগেও। প্রতিদিন সেখানেও চিকিৎসা নিচ্ছেন শত শত রোগী। যাদের বেশিভাগই জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। ফলে, শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।তবে, প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও নার্সদের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারলে এ অবস্থার উত্তরণ করা, রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে সচেতন মহল মনে করে।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা