আবু সায়েম
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জে পৃথক অভিযান চালিয়ে বালিভর্তি ২ টি ডাম্পারসহ সেগুন ও গর্জন কাঠ জব্দ করা হয়েছে। শনিবার ভোর ৫ টায় বারবাকিয়া রেঞ্জের জারুলবুনিয়া এলাকায় রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হকের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলিত বালি পরিবহনকালে বালিভর্তি ২ টি ডাম্পার আটকপূর্বক রেঞ্জ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়।এর আগে ২২ অক্টোবর ( শুক্রবার) বারবাকিয়া রেঞ্জের পাহাড়চান্দা বিটে রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে সেগুন কাঠ পাচারকালে সেগুন কাঠ জব্দ করে রেঞ্জ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। জব্দকৃত সেগুন কাঠের পরিমাণ ২০ ঘনফুট।সংশ্লিষ্ট আসামি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে, ১৮ ও ২০ অক্টোবর বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হকের নেতৃত্বে পৃথক অভিযান চালিয়ে গর্জন কাঠ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত গর্জন কাঠের পরিমাণ প্রায় ৩০ ঘনফুট। এ ব্যাপারে ৩ জনকে আসামি করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হকের অভিযানে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট,পাহাড়খেকো,ভুমিদস্যুসহ অবৈধ বালি পাচারাকারীরা একত্রিত হয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।এমনকি পাচারকারী সিন্ডিকেট দখলবাজরা বন বিভাগের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং রুদ্ধ করার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন কর্মকর্তা জানান, রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হকের সাঁড়াশি অভিযানে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অবৈধভাবে কাঠ ও বালি পাচারকারী সিন্ডিকেট, পাহাড়খেকো, জবরদখলকারীসহ ভূমিদস্যুরা। যার কারণে বন বিভাগের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে বন বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অভিযোগ করছে। যেখানে সচেতন মহল সাঁড়াশি অভিযানে সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে উৎসাহিত করার কথা,সেখানে কুচক্রীমহল কাজের গতি সংকুচিত করার অপপ্রয়াসে মেতে উঠেছে। অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। বন বিভাগের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, কুচক্রীমহল ষড়যন্ত্রকারীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হককে অব্যাহত অভিযান বন্ধ করতে নানা ধরণের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অপসারণ করার জন্য সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বন বিভাগের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ ও রুদ্ধ করার জন্য মিথ্যা সংবাদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বন বিভাগ সূত্রে আরো জানা যায়, এ ব্যাপারে মোটেও বিচলিত নন মাঠ পর্যায়ের বনকর্মকর্তারা। সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে রাজী আছেন। সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট,জবরদখলকারী ও ভুমিূস্যুদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান বনকর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হক বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের নির্দেশে বারবাকিয়া রেঞ্জে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে। বারবাকিয়া রেঞ্জের পৃথক পৃথক অভিযানে প্রায় ৫০ ঘনফুট সেগুন ও গর্জন কাঠ জব্দ করে রেঞ্জ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আসামি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে অবৈধভাবে বালি পাচারকালে বালিভর্তি ২ টি ডাম্পার আটক পূর্বক রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ও জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হবে। সরকারি সম্পদ ও বনজ সম্পদ রক্ষার্থে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাত্যহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন , অবৈধ বালু পাচারকারী , সরকারি বন ভূমি জবরদখলকারী সিন্ডিকেটসহ পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ সজাগ ও সতর্ক রয়েছেন।তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি বনভূমি উদ্ধার, অবৈধ বালু উত্তোলন রোধসহ সরকারি সম্পদ ও বনজ সম্পদ রক্ষার্থে বন বিভাগের প্রাত্যহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা