জেলা প্রতিনিধি,রংপুর
রংপুরের পীরগঞ্জে সহিংসতার মূল আসামি সৈকত আলী মণ্ডল ও সহযোগী রবিউল ইসলাম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আদালতে। এছাড়া সহিংসতার মামলায় ৩৭ আসামির তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকেও আদালতে নিয়েছে পুলিশ।আদালতের সাধারণ নিবন্ধক শহিদুর রহমান জানিয়েছেন, রোববার বিকালে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন দুই আসামি সৈকত ও রবিউলের জবানবন্দি শেষে র্যাবের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।
এদিকে, সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে থাকা ৩৭ আসামিকে বিকেলে আদালতে তোলা হয়। পীরগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি অপারেশন মাহবুবুর রহমান ও মামলার বাদী নতুন করে রিমান্ড আবেদন না করায় শুনানি শেষে তাদেরকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।এছাড়া সৈকত মন্ডলের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সুদীপ্ত শাহীন জানিয়েছেন, র্যাবের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় সৈকত ও তার সহযোগী রবিউলকে আদালতে হাজির করা হয়। তারা দু’জনেই স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করেন।পীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় ‘প্রধান অভিযুক্ত’ সদ্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী বটেরহাট মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। পীরগঞ্জ থানায় রোববার সকালে এই মামলা করেন র্যাব-১৩-এর ডিএডি আব্দুল আজিজ।
সৈকত মন্ডল কারমাইকেল কলেজের ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেয়ায় সম্প্রতি তাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা জানায় ছাত্রলীগ।
সৈকত ও তার সহযোগীর বিষয়ে শনিবার র্যাব জানায়, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অরাজকতা তৈরি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার এবং মাইকিং করে হামলাকারীদের জড়ো করেন বলে জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার সৈকত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে উত্তেজিত করে তোলেন। এ ছাড়া তিনি ওই হামলা ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন।সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি ও র্যাবের একটিসহ চারটি মামলায় রোববার পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৬৪ জন।গত ১৭ অক্টোবর ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া ও বড় করিমপুর গ্রামের সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা