স্পোর্টস ডেস্ক
গতাকাল দুবাইয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে নতুন ইতিহাসের জন্ম দিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের এমন বিস্ময়কর জয়ে লজ্জায় মাথা নুয়েছে কুহলিদের।এদিকে হারের পর থেকেই ভারতের ক্রিকেটারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে গালি দিচ্ছেন ভারতীয় কিছু উগ্রপন্থী সমর্থক।গতকালের আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে কোন হারের রেকর্ড নেই ভারতের। কিন্তু প্রথমবারের মতো যে হারটা এসেছে তা সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় ব্যবধানে। কাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে হেরেছে ভারত।আর এ জন্যই ভারতীয় সমর্থকরা সবাইকেই বলির পাঁঠা বানাতে ব্যস্ত। ম্যাচ শেষে ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামিকে আলাদা করে সমালোচনার লক্ষ্য বানানো হয়েছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে শামির অ্যাকাউন্টে গিয়ে তাকে পাকিস্তানের চর বলে গালি দিয়েছেন অনেক ভারতীয় সমর্থক।
গতকাল মাঠে নেমে শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ পাকিস্তানের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফেরাতে পারেনি ভারতের কোনো বোলার। মোহাম্মদ রিজওয়ান (৭৯*) ও বাবর আজম (৬৮*) মিলেই ম্যাচ শেষ করে এসেছেন ১৩ বল আগে। ভারতের কোনো বোলারই কাল খুব একটা ভালো করেননি। শুধু বুমরা ও রবীন্দ্র জাদেজা ওভারে ৮–এর কম রান দিয়েছেন। আর সবচেয়ে খরুচে ছিলেন মোহাম্মদ শামি। ৩.৫ ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন। অর্থাৎ ওভার প্রতি ১১ রানের বেশি দিয়েছেন। তবে এই পরিসংখ্যান দিয়েই এ পেসারকে দোষী বানানো কঠিন। কাল দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে শামি দিয়েছিলেন ৮ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ১১ রান দেয়ার পর বোলিং থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় তাকে। আবার যখন তাকে বোলিংয়ে ফেরানো হলো, তখন ম্যাচ কার্যত শেষ। ৫ ওভারে মাত্র ৩১ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। এ অবস্থায় ৭ রান দিয়েছিলেন শামি। ১৮তম ওভারে যখন ফিরলেন, তখন পাকিস্তানের দরকার ১৮ বলে ১৭ রান। প্রথম বলে ছক্কার পর টানা দুটি চার খাওয়া শামি ৫ বলেই ১৭ রান দিয়ে বসেন।
এরপরই শামির ইনস্টাগ্রামে বাজে মন্তব্য শুরু করেন কিছু ভারতীয় সমর্থক। এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী তাকে বলেছেন ‘পাকিস্তানের দ্বাদশ খেলোয়াড়’। আরেকজন লিখেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতক, নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে দিলে।’ লেখার অযোগ্য গালাগালি তো চলছিলই। এর মধ্যেই আরেক সমর্থক বলেছেন ‘ভারত দলের পাকিস্তানি।’ একজন সরাসরি লিখেছেন ‘মুসলিম।’ এক সমর্থক জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘কোন দলের হয়ে খেলছিলে… (গালি)।’ আরেকজনের পরামর্শ, ‘পাকিস্তানে চলে যাও।’ আরেকজনের পরামর্শ দিয়েছেন, ‘তুমি পাকিস্তানে চলে যাও। তুমি শান্তি পাবে, আমরাও শান্তিতে থাকব।’এক দর্শক তো ম্যাচ পাতানোর মতো বড় অভিযোগও করেছেন শামির বিরুদ্ধে। তিনি লিখেছেন, ‘মহারাজ, নিজের জাতভাইদের জেতানোর জন্য পাকিস্তান থেকে কতো টাকা খেয়েছ? অন্তত একটু লজ্জা দেখাও মহারাজ, এদিকে আমাদের চোখে তো জল চলে এলো।’
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা