মো. ইমরান নাজির
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ৫নং ফেরি ঘাটে রো রো ফেরি শাহ্্ আমানত উল্টে যাওয়ার ঘটনায় গতকাল শনিবার চতুর্থদিনে সকাল ১০টার দিকে উদ্ধার কাজে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘রুস্তম’ অংশ নিয়েছে। এদিন সকাল থেকে আরও একটি কভার্ডভ্যান ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় চার দিনে ১৩টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়। বাকি ট্রাক ফেরির সাথে পানির নিচে তলিয়ে আছে। ট্রাকটিকে শনাক্ত করে নদী থেকে উপরে তোলার চেষ্টা চলছে। তবে একটি ট্রাক পানির নিচে ফেরির সঙ্গে আটকে থাকায় উপরে তুলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জানান, এ ঘটনায় ডুবে যাওয়া শাহ আমানত ফেরিতে ১৭টি ট্রাক ছিল প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী। তার মধ্যে তিনটি গাড়ি ফেরি থেকে নামতে সক্ষম হলেও বাকি ট্রাকগুলো ফেরির সাথে পানিতে ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের যুগ্ম-পরিচালক ও উদ্ধারকারী হামজার কমান্ডার সানোয়ার হোসেন জানান, আজ সকাল আটটার দিকে চতুর্থ দিনের মত উদ্ধারকাজী জাহাজ হামজা উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। এ দুই উদ্ধারকারী জাহাজের কাজ সমন্বয় করে এই অভিযান আরও বেগবান করা হবে বলে জানান তিনি। অপর দিকে ঘাট এলাকায় ফেরি ডুবি ঘটনায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি গ্রস্থ যানবাহন মালির-চালক মানববন্ধন করেছে। এ অবস্থায় সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার দাবী করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছন, ফেরির মাস্টার-সুকানীদের ভুলের কারনে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় মালামাল গুলো নষ্ট হয়েছে। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি গুণতে হচ্ছে আমাদের। পদ্মায় তলিয়ে থাকা যানবাহনগুলো উদ্ধারকারী জাহাজের ক্রেণের মাধ্যমে তীরে উঠাতে যানবাহনের বডিসহ ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাস্টার-সুকানীদের ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটলে ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। ক্ষতিগ্রস্থ যানবাহনের এক মালিক বলেন, মাস্টার এবং সুকানীর ভুলের কারণেই ফেরি ডুবির এ ঘটনা ঘটেছে। এতে মাস্টার-সুকানীদের কোন সমস্যা না হলেও ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে আমাদের। গার্মেন্টসের সুতা লোডকরে বেনাপোল থেকে আমার গাড়ীটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে এসে ফেরিতে উঠার পর এ দুর্ঘটনায় পতিত হয়। তিনদিন পর পানির নিচ থেকে গাড়ীটি উদ্ধার হলেও এর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুণমেরামতের জন্য গাড়ীটি উল্টো যশোর নিয়ে যেতে হবে। এ ট্রাকটি মেরামত করতে মোটা টাকা ব্যয় হবে। দুর্ঘটনার ট্রাক অপর চালক মো. সেলিম মিয়া বলেন, ফেরি ডুবির ঘটনায় আমি প্রাণে বেঁেচ গেলেও আমার মহাজনের মাথায় বারি পড়েছে। গাড়িটি নদীর পানি আর পলি মাটিতে গাড়ীর ইঞ্জিন ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উদ্ধার কাজ থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের কর্তকর্তা সূত্রে জানা যায়, ডুবে যাওয়া ফেরিতে থাকা ১৪টি ভারী যানের প্রায় ২০ কোটি টাকার মালামাল নষ্টসহ যানবাহন গুলোর ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় যাদের অবহেলা রয়েছে তাদেরকে তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা পাবেন বলে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন দুর্ঘটনাস্থলে থাকা শত-শত উৎসুক জনতা।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা