দুইশিশু নিয়ে আশ্রয় খোঁজছেন বিধবা নারী

0
296

প্রতিনিধি, কালকিনি

নেই দুবেলা দুমুঠো আহারের বন্দোবস্ত। তার ওপরে নেই থাকার মতো কোন আশ্রয়। অগ্নীদগ্ধ হয়ে সারা শরীর পুড়ে যাওয়ায় বাঁকা হয়ে গেছে হাত, তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করারও সুযোগ নেই। আর অনেক আগেই পিতা মাতার মৃত্যুর পর ট্রাকচাপায় স্বামীকেও হারয়েছেন। তার পরেও জীবন জীবীকার যুদ্ধে অবুঝ ২টি শিশু সন্তান নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রিজিয়া(৪০) নামের এক বিধবা নারী। বর্তমানে শুধু একটি পলিথিন বিছিয়ে দুই সন্তান মুছা (৫) ও রায়হানকে (১) নিয়ে বসবাস করছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বারান্দায়। তবে অফিস খোলা থাকলে সেই আশ্রয়টুকুও ছেড়ে রাস্তার পাশে থাকতে হয় তাকে। আর তার জীবনের দুঃখের বাস্তব কাহিনী শুনে যে কারো চোখের জল গড়িয়ে পড়ে। যা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়। তবে সংক্ষেপে তিনি তার জীবন কাহিনী শুনালে সেখান থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জের মোকশেদপুর উপজেলার ঠাকুর বাড়ি গ্রামের খালেক মিয়ার মেয়ে সে। ছোট বেলায় মায়ের মৃত্যুর পর পিতা ফের বিয়ে করে আর সহায় সম্বল হিসেবে থাকা পৈতৃক ভিটা টুকুও লিখিয়ে নেয় সৎ মা। পরে পিতার মৃত্যুর পর তার বিয়ে হয় আব্দুল মালেক নামের এক অটোচালকের সাথে। স্বামীর সাথে সংসার ভালই চলছিল তার। কিন্তু একদিন ট্রাকচাপায় স্বামীর মৃত্যুর পর দুঃখের অথৈ সাগরে নিমজ্জিত হয় বিধবা রিজিয়া। দুইসন্তান নিয়ে রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘর বানিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। তবে বিধিবাম খুপড়ি ঘরের পাশে থাকা চুলা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় সেই ঘরে আগুন লেগে যায়। দুইসন্তান রক্ষা পেলেও সারা শরীর পুড়ে যায় অভাগিনী রিজিয়ার। সেই সাথে হাত দুটিও বাঁকা হয়ে যায়। জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠলে কয়েকবার আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করে সে। কিন্তু দুটি মাছুম বাচ্চার কথা ভেবে সেই পথ থেকে সরে আসেন। তবে বর্তমানে দুমুঠো ভাত আর একটু আশ্রয়ের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। সাথে কান্না জুড়ে দেয় সেই অবুঝ শিশু ২টিও।

 

আলোকিত প্রতিদিন // আতারা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here