লোঙা খুমী
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় ৩য় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ নভেম্বর । সকল জল্পনা কল্পনা শেষে রুমায় ৪টি ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীগণ ইতোমধ্যে ফরম জমা দিয়ে বাছাই পর্বও শেষ করেছেন। প্রার্থীতায় লড়ছেন- ১নং পাইন্দু ইউনিয়নে ৩জন,২নং রুমা সদর ইউনিয়নে ২জন, ৩নং রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নে ২জন, ৪নং গালেংগ্যা ইউনিয়নের ২জন । রুমা উপজেলায় মার্মা,বম,ম্রো, ত্রিপুরা, মুসলিম, হিন্দু, বড়ুয়া,খুমি, খিয়াং,লুসাই, চাকমা ও তংচঙ্গার বসবাস ।আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সোস্যাল মিডিয়া, অফিস,চা দোকানে এখন সরব আলোচনা চলছে ‘অমুক জনগোষ্ঠীকে ২জন মনোনয়ন দিয়েছে, আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দিক থেকে এগিয়ে মাত্র ১জনকে মনোনয়ন ’! এমন মন্তব্য সহজেই অনুমেয় করা যায়, ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের বম জনগোষ্ঠীর ভোটের সংখ্যা তুলনামূলক মার্মা সম্প্রদায়ের ভোট অনেকগুণ। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দিক থেকে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে উহ্লামং মার্মা (বর্তমান চেয়ারম্যান) ও উনার সহধর্মিণী অটুট আছে। রুমা উপজেলায় অতীতেও দৃষ্টান্তমূলক প্রতীয়মান প্রতিফলিত হয়েছে। সংসদ নির্বাচন ব্যতীত উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ভোট না হয়ে সাম্প্রদায়িক ভোট হিসাব নিকাশ হয়। তাতে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীরা এই পর্যন্ত কোন প্রতিনিধি হয়ে উঠে আসতে পারছে না ! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংখ্যালঘু নবীন নেতারা মনে করেন, জনসংখ্যা অনুপাতে প্রতিনিধি হিসাব-নিকাশ করলে আমরা কখনো প্রতিনিধিত্ব করতে পারবো না ! প্রতিনিধি না থাকলে উন্নয়নসহ সরকারি/বেসরকারি সকল দপ্তর দিক থেকেও নিঃসন্দেহে সমান ভাগ বণ্টন হয় না ! তাতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অনেক অনেক পিছিয়ে থাকে ! তাই জনগণের নেতৃত্ব প্রতিনিধি হতে হবে অসম্প্রদায়িক চেতনার সম্পন্ন ব্যক্তি । বহুজাতি জনগোষ্ঠী একত্রে বসবাস করলেও ইতোমধ্যে সংখ্যাই কম এমন জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিশ্র অনুভূতির প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ! রুমা বাজারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সেলিম উদ্দিন (৭১চেতনারধারী) বলেন, নির্বাচন সুস্থ ও নিরপেক্ষ হলে ভালো হয় , জবাবদিহিতাও থাকে । আর সংখ্যা কমই জনগোষ্ঠীর থেকে প্রতিনিধি হয়ে আসতে পারলে বেশি বেশি ভালো হবে বলেও জানান তিনি। রুমা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আব্বু বকর বলেন, আমরা সংখ্যাই কম হওয়ায় কোন প্রতিনিধি বা দলের ভালো পদে আসতে পারি না , তাই এইবার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদে প্রার্থী দিয়েছি। আল্লাহর ভরসা বলে তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন। অন্য দিকে নবীন নেতৃত্ব রেংনং ম্রো (সা: সম্পাদক ম্রো সোস্যাল কাউন্সিল রুমা শাখা) বলেন, প্রতিনিধি বিহীন জনগোষ্ঠী এক প্রকার এতিম মানবের মতো ! গালেংগ্যা ইউনিয়নের ম্রো জনগোষ্ঠীকে মনোনয়ন (নৌকার প্রতীক) দেয়া বিষয়ে অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বহু কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা মেনরত ম্রো বিজয় হলে অবহেলিত প্রান্তীক ম্রো জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু কাজ করতে পারবো। বিজয়ের মালা ছিনিয়ে আনতে তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা