মোহাম্মদ জুবাইর
নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আজকে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম বিশ্বের কাছে উন্নয়নশীল দেশ।চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই মি. ফাম ভিয়েত চিয়েনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং এই দুই জাতি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দুইদেশই অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আজকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। দুইদেশই কৃষিপ্রধান দেশ, অন্যদিকে দু’দেশে পোষাকশিল্পের অগ্রগতি অনেক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে যে রকম আন্তরিক ছিলেন ঠিক তেমনি ভিয়েতনামের হো চি মিন আন্তরিক ছিলেন বলেই ভিয়েতনাম আজ বিশ্বে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। রোববার সকালে টাইগারপাসস্ত চসিক অস্থায়ী নগর ভবনে তাঁর দপ্তরে তিনি এ কথা বলেন। এসময় ভিয়েতনাম-বাংলাদেশ বিজনেস ইনফরমেশন এন্ড সার্পোট সেন্টারের জেনারেল ডাইরেক্টর ট্রং ডু (মি. ডু), ডেপুটি জেনারেল ডাইরেক্টর মিস. এলিজা, সন হা মিনারেল জয়েন্ট স্টক কোম্পানির ট্রান দিন থানাহ, বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. মঞ্জুর কাদের, সৈয়দ এম. রহমান, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম নগরী ভূ-প্রাকৃতিকভাবে বৈচিত্রময় নগরী। সাগর, পাহাড়, নদী বন্দর বেষ্টিত একটি অপরূপ নগরী। এই রকম নগরী পৃথিবীতে বিরল। হাজার বছর আগে থেকে মানুষের ইতিবাচক কল্যাণ, আন্দোলন, সংগ্রাম বিশেষ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরোভাগেই ছিল চট্টগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চসিক সাগর সংলগ্ন এলাকায় ওশান এমিউজমেন্ট পার্ক এবং সরকারের উদ্যোগে স্বাধীনতার স্মৃতিসৌধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যা চট্টগ্রামসহ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে উজ্জ্বল করবে। তিনি নগরীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ভিয়েতনামের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে ওশান এমিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণের বিষয়টি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে অবগত করে বলেন, এই পার্কটিতে বিনিয়োগে ভিয়েতনাম এগিয়ে আসলে পর্যটন ক্ষেত্রে বিশাল খাত তৈরী হবে এবং উভয়ই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারবে।
মেয়রের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত বলেন, চট্টগ্রাম ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সাহিত্য সবকিছুতে সমৃদ্ধ। আজকের এই চট্টগ্রাম সারা বিশ্বকে অনেকাংশে প্রতিনিধিত্ব করে। কারণ বর্তমান সরকার যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে বিশেষ করে বে-টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, কর্ণফুলীর তলদেশে ট্যানেল, মিয়ানমার হয়ে চীনের কুম্বিং শহর পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক বিশেষ জোন এগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম বিশ্ব অর্থনীতির একটি হাব হিসেবে পরিণত হবে- এতে কোন সন্দেহ নেই। ভিয়েতনাম সবসময় উদ্ভাবনী বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে পর্যটন শিল্পে ভিয়েতনামের যে অভিজ্ঞতাগুলো আছে তা চট্টগ্রাম নগরীতে কাজে লাগাতে আমরা আগ্রহী। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিনিয়োগের ব্যাপারে আমরা উদ্যোগী হতে চাই। এই ব্যাপারে চসিক মেয়রের সাথে যে সব আলোচনা হয়েছে তার একটি ইতিবাচক বার্তা আমি আমাদের সরকারের কাছে পৌঁছে দেব। তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ে মেয়রের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে তার সরকারকে অবগত করবেন বলেও জানান।
আলোকিত প্রতিদিন // আতারা