আহসানুল ইসলাম আমিন
ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মুন্সীগঞ্জ। আলু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এই জেলা। আলু উৎপাদনের রাজধানী হিসেবে দেশজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে মুন্সীগঞ্জের। দেশের মোট আলু উৎপাদনের সিংহভাগ আবাদ হয় মুন্সীগঞ্জে। কয়েকদিন পরেই আলু রোপণের পুরো মৌসুম চলে আসবে। এরই প্রস্ততি হিসেবে জেলার ছয় উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সকাল-সন্ধ্যা কাজ করছেন আলু চাষী কৃষকরা। জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু । এবার আলুর দাম কম পাওয়ার পরও নতুন স্বপ্ন নিয়ে মৌসুমের শুরুতে আলু রোপণ করার জন্য হিমাগার থেকে বীজ উত্তোলন, জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ এবং এবং জমি প্রস্তুত করছে চাষীরা।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৩৭ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে কৃষকরা আলু আবাদ করবে। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৮শত ৫ হেক্টর, টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ৯ হাজার ৯শত হেক্টর, সিরাজদিখান উপজেলায় ৯ হাজার ৩শত ৬০ হেক্টর, লৌহজং উপজেলায় ৪ হাজার ১শত ১০ হেক্টর, শ্রীনগর উপজেলায় ২ হাজার ২শত ৬০ হেক্টর এবং গজারিয়া উপজেলায় ২ হাজার ৪শত ৬৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হবে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সরেজমিনে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন তাজপুর এলাকায় দেখা যায়, জমিতে পুরোদমে চলছে আলু রোপণের প্রস্তুতি। এতে জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কারসহ সব কাজ শেষ করে আলু রোপণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে চাষিরা। আর মাত্র কয়েক দিন পর আলু রোপণ শুরু হবে এ উপজেলায়। এর ফলে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ফসলি জমি গুলো থেকে ধান কাটা শেষ করছে অনেক কৃষক। আবার অনেকের নিচু জমি হওয়ায় ধানা কাটা শেষ হয়নি এখনও। তাদের জমি পরিষ্কার করতে দেরি হবে।আর যাদের জমির পানি চলে গেছে তারা জমি পরিষ্কার করছে। রশুনিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো.হুমায়ুন বলেন, আমার জমি থেকে পানি সরে গেছে, তাই জমি পরিস্কার করছি। কয়েকদিন পরেই এই জমিতে আলু রোপণ শুরু হবে। আরেকজন কৃষক রাহায়ন মিল্কী বলেন, মাত্র জমি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার বেশির ভাগ জমিতে পানি রয়েছে। কয়েক বছর থেকে আলুতে ভালো লাভ হয়না। তার পরও আমরা আলু আবাদ করি।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম জানান , এ মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এখানকার কৃষকরা অরিকো, মালতা, ডায়মন্ড, পেরটোনাইস ও বিএডিসি’র আলু রোপণ করে থাকে। উল্লেখিত জমিতে আলু রোপণ হলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হওয়ার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও বলেন, কৃষক কী ভাবে আলু চাষ করবে, চারাগাছে কীটনাশক ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা যায়। সে বিষয়ে কৃষকদের অবহিত করা হচ্ছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আলু রোপণ চলবে।
আতারা // এপি