একেএম ফারুক হোসাইন
নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. গাউছুল আবরার উদ্দিন জন্ম নিবন্ধনের নাম করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েও নিবন্ধন না করে কালক্ষেপণ করায় বুধবার তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে স্থানীয় জনগণ। স্থানীয় জনগণের ভাষ্যে জানা যায়,জন্ম নিবন্ধনের জন্য গত ৬ মাস আগে আবেদন করেন এ ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের কাছে।সরকারি ফি নিবন্ধন বাবত ৫০ টাকা হলেও সচিব গাউছুল আবরার প্রতি আবেদনে ৩০০টাকা হারে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেন।প্রবাসীদের বেলায় এ অর্থ একহাজার থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্তও দাঁড়ায়। ভুক্তভোগী সেনবাগ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র শরীফ আহমেদ বলেন,আমার বাবা,মা ও আমার জন্ম নিবন্ধনের জন্য গত তিনমাস আগে ৩ টি আবেদন ও ১ হাজার টাকা দিয়ে যাই।আজ দেবে, কাল দেবে বলে সময় ক্ষেপণ করে যাচ্ছে। এদিকে আমার কলেজের ভর্তি সংক্রান্ত কাজে আমি আটকে আছি।কবে মুক্তি পাবো সেটা জানা নেই।আরেক ভুক্তভোগী রিক্তা ঘোষ জানান, গত মার্চে আমার মেয়ের জন্য আবেদন করি। গত ৮ মাসে অন্তত ষোলবার ইউনিয়ন পরিষদে আনিয়েছে সচিব আবরার।তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘুস নিয়েও হয়রানি থেকে রেহাই মেলেনি। এমন অসংখ্য ভুক্তভোগী এখন প্রতিদিন পরিষদে ঘুরেফিরে আসছে।বর্তমান ইউপি সদস্য ইমাম হোসেন বলেন, পুরো ইউনিয়নের অন্তত দশ থেকে পনেরো হাজার মানুষ থেকে জন্ম নিবন্ধন থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক সচিব গাউছুল আবরার উদ্দিন।এ বিষয়ে কাদরা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান পলাশ বলেন,সচিবের এ ধরনের অনৈতিক অর্থ হাতিয়ে নেয়া এবং জন হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ও সেনবাগ ইউএনওকে জানিয়েছি।এবিষয়ে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ মোরশেদ আলমকে বিষয়টি জানালে তিনি নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খানকে বিষয়টি উল্লেখ করে এসএমএস করেন।জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক আবু ইউসুফ বলেন,বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।তদন্ত করছেন সেনবাগ উপজেলা ইউএনও। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন,তদন্ত শেষ।আমি এ প্রতিবেদন আজই পাঠিয়ে দেবো।আর একদিনও দেরি করার ইচ্ছে নাই।উল্লেখ্য, জনগণের বিক্ষোভের খবর পৌঁছানোর পর ক্ষুব্ধ ইউএনও এমন মন্তব্য করেন। এ প্রতিবেদক গাউসুল আবরারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।