পিসি দাস
এই পৃথিবীতে নানান রকম মানুষের নানান রকমের শখ ও আনন্দ থাকে। আর এই শখের কাজটি করতে নিজেকে পরম আনন্দিত ও সুখ উপলব্ধি করে থাকে অনেকেই। শখের বশবর্তী হয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করেই চলেছেন দিনাজপুর বন বিভাগে কর্মরত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আকতার হামিদ। তার জীবনের একমাত্র আনন্দ যেন বৃক্ষরোপণ করা ।ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন অক্সিজেনের অভাব বোধ না করে সেই জন্য তিনি নিজেকে বৃক্ষরোপণে সর্বদা নিয়োজিত রেখেছেন। দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ীর বাসিন্দা সরকারি চাকুরীজীবী ওই বৃক্ষপ্রেমীর বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করাই জীবনের সবচেয়ে বড় শখ।
আকতার হামিদের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা যায়, ছুটির দিনে ও অবসর সময়ে পেলেই তিনি গাছ রোপণ করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তিনি বাবা-মায়ের কাছ থেকে গাছ রোপণ করার উৎসাহ পেয়েছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই বাবার সাথে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় পুকুর পাড়ে তাল, কড়াই,
বরই,আম, কাঁঠাল, লেবু এবং সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন চারা গাছ লাগিয়েছেন।যা এখনও দৃশ্যমান রয়েছে এবং কিছু কিছু গাছের কাঠ দিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র তৈরি করেছেন। যেখান থেকে গাছ কেটেছেন সেখানে আবার পুনরায় গাছ লাগিয়েছেন। এছাড়াও তিনি আরো জানান, যেখানে চাকুরীর সুবাদে গিয়েছি সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়েছি। ১০-১৫বছর পূর্বে যেখানে ফল গাছ লাগিয়েছি সেখানে গিয়ে সেই গাছের ফল খেয়েছি। নিজে গাছ লাগিয়ে সেই গাছের ফল খাওয়া্র মজা ও আনন্দই আলাদা। দিনাজপুরে এসেও তার সেই গাছ লাগানোর কাজটি ভুলে যাননি। দিনাজপুরে সরকারি বিভিন্ন জায়গায় যেমন: রামসাগর জাতীয় উদ্যান এর আগে প্রধান রাস্তায়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আগে ডাম্পিং এরিয়া থেকে পূর্ব দিকে, শিশুপার্কের পুকুর পাড়ে, দিনাজপুর শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ধারে তালসহ বিভিন্ন গাছ রোপণ করেছেন। পরিচিত অপরিচিত অনেককেই তিনি গাছের চারা উপহার দিয়েছেন। তিনি তার সন্তানদের কোন কোন জায়গায় তাল গাছ লাগিয়েছেন তা জানিয়েছেন। কারণ তার অবর্তমানে তার সন্তানরা সেই গাছের মধ্যে তার বাবার স্মৃতি খুঁজে পাবেন। তাছাড়া যেসব গাছ তিনি লাগিয়েছেন তা কিছুটা হলেও জলবায়ূর বিরূপ প্রভাব থেকে পরিবেশকে রক্ষা করবে। এর পাশাপাশি মানবকল্যাণ ও সৌন্দর্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও তিনি বৃক্ষ রোপণকরার একটি সুন্দর ধারণা দিয়েছেন, যেমন: বট পাকুড় গাছের ডাল দিয়ে গাছ লাগানো যায়। ৮-১০ ইঞ্চি মোটা ৭-৮ ফিট লম্বা পর্দা পাকুড় গাছের ডাল দিয়ে রাস্তার কোন ফাঁকা জায়গায় লাগালেই তা ধীরে ধীর বটবৃক্ষে পরিণিত হয়ে যাবে। যেটি দিয়ে এক সময় বিশ্রামাগার হবে, পশু পাখির বাসা হবে, ফল পাবে মানুষের যাতায়াত বাড়বে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।গাছ আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান, তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আসছেন এবং তিনি জানান, যতদিন জীবিত থাকব, ততদিন পর্যন্ত গাছ লাগাব।
আতারা // এপি