আবু সায়েম, কক্সবাজার
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন রেঞ্জে বন্যহাতি রক্ষায় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক মাইকিংসহ রাত্রিকালীন টহল জোরদার করা হয়েছে। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকারের দিক নির্দেশনায় ঈদগাঁও রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খাঁনের নেতৃত্বে ভোমরিয়াঘোনা বিট এবং পূর্ণ গ্রাম বিটের বিভিন্ন এলাকায় “বন্যপ্রাণী প্রকৃতির অংশ, আমরা প্রকৃতিকে বাঁচাবো আগামী প্রজন্মের জন্য”এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বন বিভাগের বিট কর্মকর্তাসহ স্টাফদের সহযোগিতায় বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রাত্রিকালীন টহল জোরদার করা হয়েছে। সেই সাথে বন বিভাগের উদ্যোগে এলাকাবাসীকে সচেতন হওয়ার নিমিত্তে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ মাইকিংসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ঈদগাঁও রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খাঁনের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় পথসভার আয়োজন করে এলাকাবাসীকে সচেতন হয়ে বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঈদগাঁও রেঞ্জাধীন পুর্ণগ্রাম বিটের বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণীর সুরক্ষায় এবং বন্যপ্রাণী চলাচলের পথে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য স্টাফ ও ভিলেজারসহ বিভিন্ন সনে সৃজিত নতুন ও পুরাতন বাগানের পাশে তৈরিকৃত ৮টি টংঘর ও আনু. ১১০০ রানিং ফুট ঘেরা বেড়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। এদিকে, ঈদগাঁও রেঞ্জের ভোমরিয়াঘোনা বিট ও পূর্ণগ্রাম বিটে বন্য হাতির মরণফাঁদ হিসেবে পরিচিত জি আই তার আনু. ১০০০ রানিং ফুট উদ্ধার করা হয়েছে। বন বিভাগের অভিযানে বন্যহাতির মরণফাঁদ হিসেবে খ্যাত এসব জিআই তার উদ্ধারে বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী নিরাপদে বিচরণ করতে পারবে।বন বিভাগের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করছেন আর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। ঈদগাঁও রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খাঁন বলেন,মানুষ হাতি সংঘাত নিরসন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি । বন্যপ্রাণী ও বন্যহাতি সংরক্ষণ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব । নির্বিচারে বন্যপ্রাণী হত্যা, ধরা এবং শিকার করা যাবে না ।বন্যহাতিদের আঘাত করে নিধন করলে প্রকৃতির ভারসাম্যে বিরাট প্রভাব ফেলবে। সামাজিকভাবে সচেতন হয়ে আমাদের মানুষ ও হাতি সংঘাত নিরসন করে বন্যপ্রাণী ও হাতিদের বাঁচাতে এগিয়ে এসে বনসম্পদ রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বন বিভাগের জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা,পথসভা লিফলেট বিতরণ মাইকিংসহ রাত্রিকালীন টহল জোরদারের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন,বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন অধিদপ্তরের কড়াকড়ি নির্দেশনা রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিভিন্ন রেঞ্জ এবং রেঞ্জের আওতাভুক্ত বন্যহাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসচেতনতামূলক সভা আয়োজন করা হয়েছে। এলাকাবাসী যাতে সচেতন হয় সেজন্য বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে, বন বিভাগের স্টাফদের সহযোগিতায় প্রত্যেকটি এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে ।
তিনি আরও বলেন, একটি ম্যাসেজ আমরা জনগণের নিকট পৌঁছে দিতে চাই সেটা হচ্ছে কোন মতেই বন্যহাতিকে আক্রমণ করা যাবে না, বন্যহাতি লোকালয়ে চলে আসলে বন বিভাগকে অবহিত করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। বন্যহাতি প্রকৃতির অংশ, প্রকৃতির ভারসাম্য এবং প্রকৃতিকে বাঁচাতে বন্যহাতির অবদান অপরিসীম, আর সেই বিষয়টি আমরা জনগণকে পৌঁছে দিতে লিফলেট বিতরণ করছি,সচেতনতামূলক মাইকিংও করা হচ্ছে।আরেকটি বিষয়টি আমরা জনগণের নিকট অবগত করছি,বন্যহাতি কর্তৃক কারো প্রাণহানি ঘটলে অথবা কোন ব্যক্তির ফসল নষ্ট করলে ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান আছে। বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষা প্রত্যেকটি জনগণের নৈতিক দায়িত্ব ,কারণ সুস্থ সুন্দরভাবে প্রকৃতিতে জীবন অতিবাহিত করতে বন্যহাতি ও বন্যপ্রাণীর অবদান অপরিসীম।
আতারা // এপি