সারিয়াকান্দিতে পিঠা খাওয়ার উৎসবে মেতেছেন গ্রামের কিষান-কিষানি

0
364

মাইনুল হাসান মজনু

‘ঘরে নতুন ধান এসেছে। ধান দিয়ে চাল করার পর আটা তৈরি করছি। আটা দিয়ে তৈরি করা হবে হরেক রকমের পিঠা।  পিঠা বানিয়ে মেয়ে-জামাইসহ নাতী-নাতনীদের পরম আদরে খাওয়াবো এবং নিজেরাও খাবো।’ কথাগুলো বলছিলেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা গ্রামের ষাটার্ধো টুলী বেগম। টুলী বেগম একই গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী। তার মেয়ে জামাই চাকুরীর সুবাদে থাকেন রাজশাহী মহানগরীতে। সঙ্গে থাকে দুই নাতি-নাতনী। এবার অগ্রাহায়ণ মাসের শুরুতেই বাড়িতে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরির ব্যস্ততা চলছে তার বাড়িতে। তিনি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকিতে করে চাল থেকে আটা তৈরি করছেন। তিনি জানান, আগের দিন চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়েছিলো, তারপর আজকে সেটি দিয়ে আটা তৈরি করছি। সন্ধার দিকে টাটকা আটা দিয়ে তৈরি করা হবে হরেক রকমের পিঠা। পিঠার মধ্যে দুধপিঠা, তেলপিঠা, কুলিপিঠা, পাটিশাপটা, ভাপাপিঠা, চিতইপিঠা, মুঠা, পাকনপিঠা, নকশিপিঠা, তিন চালের গুড়া, শীতের ঝালবড়া ইত্যাদি। এজন্য ওই বাড়িতে সকল নারীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। নাতী-নাতনীদের জন্য ওইসব পিঠাপুলি তৈরী করা ছাড়াও নিজেদের খাওয়ার জন্য শীতের ওইসহ পিঠাপুলি তৈরিতে হাত লাগিয়েছেন সবাই। শীতের পিঠাপুলি তৈরিতে সহযোগিতা করছেন বাড়ীর অন্যান্য নারীরা।তারা হলেন, ফিরোজা বেগম ও লিমা আক্তার। তারা বলেন, আমরা মেহমানদারী করার জন্য ওই সব পিঠাপুলি কেবল রাজশাহীতেই পাঠাবো না। আমাদের ছেলে-মেয়ে, নাতী-নাতনীদেরকেও শীতের সকালে পরম আদরে খাওয়াবো নিজ হাতে তৈরি করা ওইসব পিঠা। বাড়ীর সবাইকে নিয়ে শীতের সকালে মিষ্টি রোদে এক সঙ্গে বসে এ পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, এবার তো আমন ফসলের আবাদ ভালো হয়েছে। যে যেখানেই ধানের আবাদ করেছিলেন, সেখানেই আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। তাই কেবল আমাদের গ্রামে নয় প্রতিটি গ্রামেই শীতের পিঠাপুলি খাওয়ার সবাই উৎসবে মেতে উঠেছেন কৃষক পরিবার। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আবদুল হালিম বলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় এবার আমনের ফলন হয়েছে আশানুরূপ। যে কারণে গ্রামের মানুষ আমন ধানের বিভিন্ন ধরনের পিঠা পুলি খাওয়ার উৎসব -আমেজে মেতে ওঠেছেন।

 

আতারা // এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here