ব্যুারো চিফ,বরিশাল
বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহনের টুমচর আলহাজ আবদুল মজিদ খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে।গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় খোয়া গেছে নগদ অর্থ ও মূল্যবান কাগজপত্র। জানা গেছে, চোর স্কুলের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে অফিস কক্ষের ভেতরে ২টি আলমারী ভেঙে গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র ও ফাইলগুলো এলোমেলো করে ফেলে রাখে। প্রত্যেকটি টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভেঙে কাগজপত্র বাহিরে বের করে রাখে।অফিস কক্ষে শিক্ষকদের নির্ধারিত ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা টাকা, মূল্যবান কাগজপত্রসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়।এছাড়াও স্কুলের লাইব্রেরী কক্ষে ঢুকে আসবাবপত্র তছনছ করে রেখে যায়, এবং খণ্ডকালীন অফিস সহকারী মো. জাকির হোসেনের ড্রয়ারের তালা ভেঙে তার ব্যক্তিগত আরও ৩০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের পার্শ্বে মসজিদ সংলগ্ন উত্তর দিকের ভবনে দুইশিক্ষক অমল বিশ্বাস ও হাসান আহমেদ আবাসিকভাবে থাকেন। এ বিষয়ে অমল বিশ্বাস বলেন, সকাল বেলা স্কুলের বাথরুমে যাওয়ার পথে লাইব্রেরির দিকে লক্ষ্য করে দেখি তালা ভাঙা। এরপর আমি দরজা খুলে দেখি সব কিছু তছনছ করা। তারপর আমার সহকর্মী হাসান আহমেদকে অবহিত করি। পরবর্তীতে আমরা দুজন স্কুলের পাশেরবাড়ি খণ্ডকালীন অফিস সহকারী জাকির হোসেনকে ডেকে আনি। এরপর প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয়ের সভাপতি, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষকদের ফোন করে চুরির বিষয়ে তাদেরকে জানাই। এ বিষয়ে অপর সহকারী শিক্ষক হাসান আহমেদ বলেন, তাৎক্ষণিক আমি ৯৯৯ নম্বরে কল করে তাদের সহযোগিতা কামনা করি, তারা আমাকে বলেন থানায় জানাতে। তারপর আমি থানায় ডিউটি অফিসারকে কল করি এবং তাদের সহযোগিতা কামনা করি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাকে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে সহকারী শিক্ষক হাসান আহমেদ মোবাইলে কল করে করে জানান,বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের মূল দরজার হ্যাজবল ও তালা ভাঙ্গা এবং অফিস কক্ষের মধ্যে কাগজপত্র ও মালামাল এলোমেলো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে।
উক্ত সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত বিদ্যালয়ে চলে আসি এবং অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পাই অফিস কক্ষের মূল দরজার হ্যাজবলসহ তালা ভাঙা। অফিস কক্ষে থাকা আমার নিজস্ব টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভাঙা, ২টি স্টীলের আলমারীর তালা ভাঙা, এবং শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য ১টি ফাইল কেবিনেটের ১২ টি ড্রয়ারের মধ্যে ৯ টি ড্রয়ারের তালা ভাঙা।ফাইল কেবিনেটের একটি ড্রয়ারে রাখা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায়কৃত বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ নগদ ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা এবং বিদ্যালয়েরখণ্ডকালীন অফিস সহকারী জাকির হোসেনের টেবিলের ড্রয়ারে রাখা তার ব্যক্তিগত ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যায়নি।তিনি আরও বলেন, আলমারীতে সংরক্ষিত রাখা প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীর ফাইল খুঁজে পাওয়া যায়নি।পরবর্তীতে থানা থেকে আগত তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নাইম এবং এস আই শহীদুল স্বচক্ষে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন।তদন্ত কর্মকর্তা নাইম বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি এবং তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত জড়িতদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।পরবর্তীতে উক্ত চুরির ঘটনায় বন্দর থানায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চুরির বিষয়ে একটি এজাহার নথিভুক্ত করেন।উল্লেখ্য, একই রাতে বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বে জহির স্টোর্স থেকে নগদ ২৮৫০ টাকা ও সাড়ে ৭ প্যাকেট হলিউড সিগারেটিএবং কোমল পানীয়সহ অন্যান্য মালামাল চুরি হয়।এজাহারের বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয় ও দোকান চুরির ঘটনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। তদন্ত সাপেক্ষে এ রকম ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
আতারা // এপি