প্রতিনিধি,নীলফামারী
বাঁশ দিয়ে মুরগির খাঁচা তৈরি করে অভাবকে জয় করেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের প্রায় ৩০ টি পরিবার। এ গ্রামেরই একজন বাসিন্দা আবতাজ উদ্দিন (৫৫)। তার ফসলী জমিজমা তেমন একটা নেই। ১৫ শতক জমির ভিটে-বাড়ি। ৩ মেয়ে ১ ছেলে নিয়ে ছোটো ঘরে বসবাস। অভাব যেন তার নিত্যসঙ্গী। অভাব থেকে মুক্তি পেতেই আবতাজের অদম্য চেষ্টা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বাঁশ দিয়ে মুরগির খাঁচা তৈরি করে জীবীকা নির্বাহ করছেন তিনি।মুরগির খাঁচা তৈরি করে আবতাজ মিয়ার সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাকে দেখেই উৎসাহিত হয়ে মঙ্গাপীড়িত উপজেলা বলে পরিচিত এই গ্রামের বেশ কিছু নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন খাঁচা তৈরির পেশা।সরেজমিনে আবতাজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরোদমে চলছে খাঁচা তৈরির কাজ। আবতাজসহ তার পরিবারের সদস্যরাও কাজে মেতে আছেন। কেউ বাঁশ কাটছেন, কেউ পাতি তুলছেন আবার কেউবা মগ্ন রয়েছেন খাঁচা তৈরিতে।আবতাজ উদ্দিন জানান, ২০ বছর ধরে আমি এ পেশায় জড়িত।সারাদিন নিজ বাড়িতে স্ত্রীসহ আমার নিজ হাতে তৈরি করি হাঁস-মুরগির খাঁচা।উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বাঁশ কিনে আনা হয়। প্রতিটি বাঁশের দাম পড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। গড়ে প্রতিটি বাঁশে ১০টি খাঁচা তৈরি করা যায়। প্রতিটি খাঁচা বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে।তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণসহ সরকারের সহযোগিতা পেলে মুরগির খাঁচা বানিয়ে বাঁশশিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। আবার এলাকায় অনেক কর্মসংস্থান হবে।স্ত্রী সন্তানরা সবাই যৌথভাবেই বাঁশ শিল্পের কাজ করি৷ হাট-বাজারে বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোনো রকমেই চলে আমার সংসার ৷ এছাড়াও আমার বাড়ি ঘরের অবস্থাও অনেক খারাপ, সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি আমি। বেসরকারি সংস্থা আশা নামের এনজিও থেকে প্রতি বছর ঋণ নেই, সেই ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হয় আমাকে।কাজের ফাঁকে খাঁচা তৈরির আরেক কারিগর রুপালি জানান, খাঁচা তৈরির কাজ খুব পরিশ্রমের নয়। এ গ্রামের প্রায় ১৫০ জন নারী পুরুষ বাঁশ দিয়ে খাঁচা তৈরির কাজ করেন।সরকারি সহযোগিতায় এখানে খাঁচা তৈরির একটি কারখানা হলে গ্রামের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে।
আতারা // এপি