প্রতিনিধি, নেত্রকোণা
ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলা সহনাটি গ্রামের হাবিবুর রহমান এর ছেলে পুলিশ এর এ এস আই শাহিন মিয়া(৩৪) এর নামে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের বান্দনাল গ্রামের ফজলুর রহমানের মেয়ে ফারহানা আক্তার(২০) বাদি হয়ে বিজ্ঞ আমলি আদালত কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। মামলা নং- ১৬৮(১)২০২১।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এএসআই শাহীন মিয়া যৌতুক লোভী, পরনারী, খারাপ প্রকৃতির লোক। বাদি বিবাদির সাথে ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিবাহ হয়।তাদের ১০ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সন্তান হবার পর পরই বিবাদি স্ত্রীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে এবং তিন লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে দাবি করে। এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা অমানবিক নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং যৌতুকের টাকা না দিলে বাদিকে নিয়ে সংসার করবে না তালাক দিবে বলে হুমকি দেয়। মামলার বাদি ফারহানা বলেন, আমাদের বিয়ের বছর যেতে না যেতেই তার রুপ দেখতে পারি, তবু্ও সংসার করার চেষ্টা করেছি কিন্তু স্বামী ও শশুর শাশুড়িসহ তার পরিবারের লোকজন শারীরিক মানসিক নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনের কারণে স্বামীর বাড়িতে থাকতে পারিনি। এক বছরের সন্তান কে নিয়ে বাবার বাড়িতে আছি, আমাদের খবরা-খবর নেয় না, ভয়ভীতি দেখায়,অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। তাদের বাড়িতে ও নিচ্ছে না।আমার মেয়েকে ও দেখতে বা ভরণপোষণ করে না। আদালতে মামলা করেছি আমি চাই আদালত যেন সুট্ঠ বিচার বিশ্লেষণ করে বিচার করেন।এছাড়াও আরও জানান, সে অন্য মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলে , জিজ্ঞেস করলে বলে না, বিভিন্ন এসএমএস ও দেখেছি ,তার ফোন না থাকায় কোন প্রমাণ রাখতে পারেনি। বাদির বাবা – মা বলেন- বিয়ের সময় যৌতুক চায়নি তবুও মেয়ের যা জিনিপত্র লাগে দিয়েছি এখন যৌতুক দাবি করে টাকা চায়।এতো টাকা কোথায় থেকে দিবো তাই বলে আমাদের মেয়েকে এভাবে নির্যাতন করলে কোন বাবা-মা মেনে নিবে।তবু্ও বিচার শালিশের মাধ্যমে কয়েক বার স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়েছি।এদিকে ছেলে যে বিবাহিত ছিল আমাদের জানাইনি । ১ম স্ত্রী কে ডিভোর্স দিয়েই আমাদের মেয়েকে বিয়ে করেছে। নির্যাতনের কারণে ১ম স্ত্রী পাগল হয়ে গেছে । এদিকে ১ম স্ত্রী রাফিয়া আক্তার জুঁইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে ভারসাম্যহীন স্তব্ধ হয়ে থাকতে দেখা যায়। তার সাথে কথা বললে জানায়, এইচ এস সি পাস করার পরেই বাবা মা ২০১৪ সালে বিয়ে দিয়ে দেয়, ডিগ্রীতে ও ভর্তি হয়ই। কিন্তু পড়া লেখা আর হলো না। স্বামী আমাকে অনেক অত্যাচার করতো শশুর ও সুবিধার ছিলো না হাত ধরে পেলে, কুপ্রস্তাব দিতো আমি রাজি না হওয়ায় নির্যাতন শুরু করতো তাদের ছেলের কাছে বানিয়ে বানিয়ে কথা লাগাতো ।স্বামী কে বললে তা বিশ্বাস করেনি। ৫ বছর পর আমাকে তালাক দিয়ে দিলো। এর পর আমি এমন অবস্থায় চলে গেছি যে কিছুই বলতে বা বুঝতে পারিনি মাথা সবসময় স্তব্ধ হয়ে থাকতো, বোকার মতো বসে থাকতাম। তিনি আরও বলেন, শুনেছি আমার তালাকের পরেই সে বিয়ে করেছে কিন্তু তারও এমনই অবস্থা, তাই পরির্বতীতে আর কোন মেয়ের জীবন ক্ষতি যেন করতে না পারে তাই ওর উপযুক্ত বিচার কামনা করছি। আসামীর বাড়িতে গণমাধ্যম গেলে এএসআই শাহিন মিয়াকে বাড়িতে পাওয়া না গেলেও তার বাবা-মা কে পেয়ে বিস্তারিত কারণ জানতে চাইলে বাবা -মা বলেন, বাদি ফারহানা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতো, বাপের বাড়িতেই থাকতো বেশি।আর মামলার অভিযোগ গুলো মিথ্যা কোন যৌতুক চাইনি।১ম বিয়ের কথা বললে তারা বলেন, আমরা মেয়ের বাবা মা কে বলেই ছেলেকে ২য় বিয়ে করিয়েছি।
এ এস আই শাহিন এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযোগ মিথ্যা এটা পারিবারিক বিষয় মামলা চলছে। তাহার ১ম স্ত্রীর কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানায় ১ম স্ত্রী মানসিক রোগী ছিল তাই সামাজিক ভাবে ছেড়ে দিয়েছি। পাঁচ বছর পর মানসিক রোগী হল কি ভাবে এ কথা জানতে চাইলে ফোন কেটে দেয় এস আই শাহিন।
আলোকিত প্রতিদিন /২১ ডিসেম্বর, ২০২১/মওম