প্রতিনিধি,নীলফামারী:
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা বেষ্টিত কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা একটি নড়বড়ে কাঠের সেতু।
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া গ্রামে তিস্তার বন্যায় সৃষ্ট খালের উপর একটি কাঠের তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে র্দীঘদিন ধরে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী।ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হকের উদ্যোগে নির্মিত এ সেতু পারাপারে একটু অসাবধানতায় প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।এবারের বন্যায় পানির তীব্র স্রোতে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৩০ মিটার দীর্ঘ ও ৫ ফুট চওড়া কাঠের সেতুর পাটাতনের দুই প্রান্তসহ ভেঙ্গে গেছে দুই পাশের রেলিং। মাঝ বরাবর ভেঙে গেছে কাঠের তক্তাগুলো। বিকল্পব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই থেমে নেই এলাকাবাসীর নিত্যদিনের চলাচল।ক্রমেই নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে কাঠের সেতুটি। একটু অসাবধানতায় প্রায়ই শিক্ষার্থী, পথচারী, বাই-সাইকেল, মোটর সাইকেল আরোহী,ভ্যানগাড়ী সেতু থেকে পানিতে পড়ে যায়।
অতিকষ্টে রিক্সাভ্যান চলাচল করলেও সিএনজি,অটোরিকশা,পণ্যবাহীগাড়ি, মাইক্রোবাসসহ অন্য যান যাতায়াত করতে পারে না এই সেতু দিয়ে।
এলাকাবাসী জানায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের হওয়ায় এ এলাকায় কেউ আত্মীয়তাও করতে চায়না।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, তাদের চরে অনেক ফসল হয়। ফসল বিক্রির জন্য তাদের নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়। নৌকা দিয়ে অন্য পাশে নেয়া লাগে। আর গবাদি পশু পার করা হয় খালে নামিয়ে।
চরের বাসিন্দা আহেলা বেগম(৬০) বলেন, গ্রামের কোনো গর্ভবতী মা অসুস্থ হলে তাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ভাঙ্গা রাস্তা আর সাঁকোর কারনে গর্ভবতী মায়ের অকাল গর্ভপাত হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এ ছাড়া সেতুর পাশেই মাত্র ১০০গজ দুরত্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শত শত শিক্ষার্থী এবং এলাকার সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীরা প্রতিদিন চলাচল করে থাকেন কাঠের সাঁকোর উপর দিয়ে। ফলে সেখানে দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,ভাঙ্গা সেতু পার হয়েই তারা বিদ্যালয়ে যায়। তবে সেতুটি পার হতে ভয় লাগে। বন্যার সময় হেঁটে পার হওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।
আলো নিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তফিজার রহমান বলেন, সেতুর মাঝখানে কাঠের তক্তাগুলো ভেঙে যাওয়ায় এখন মোটরসাইকেল পারাপার করা যায় না।হেঁটেই স্কুলে যাতায়াত করছি।ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা সেতুর নীচে কাঁদা পানি ভাঙ্গিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে।যেকোনো সময় বিষাক্ত পোকামাকড়ের আক্রমণের স্বীকার হতে পারে।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী সফিউল ইসলাম বলেন, ওই রাস্তা আর সেতু এলজিইডির আওতাভুক্ত নয়।তবে শিক্ষার্থী আর কৃষকের কথা মাথায় রেখে আমরা খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
আলোকিত প্রতিদিন/২১ ডিসেম্বর,২০২১/ আর এম