ডিমলার নির্বাচন:অন্তর্কোন্দলেই নৌকার ভরাডুবি

0
298
রুবেল পারভেজ,
চতুর্থ ধাপে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। ২৬ডিসেম্বর  রোববার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে  উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে আ.লীগের  প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়ে জয় পেয়েছে মাত্র দুটি ইউনিয়নে । অন্যান্য ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ২টিতে  আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, ৩টিতে স্বতন্ত্র  প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডিমলা উপজেলার ৭টি ইউপির মধ্যে ৫ ইউপিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে নৌকার ভরাডুবির কারণ বিশ্লেষণ করে  দেখা যায়, নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির কারণ সঠিক প্রার্থী বাছাইকেই দায়ী করছেন রাজনৈতিক সচেতন মহলসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। নির্বাচনে অবৈধ টাকার ছড়াছড়ি আর দলটির অন্তর্কোন্দল, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের এই ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করছেন দলটির সর্ব স্তরের নেতা ও সমর্থকেরা। পাশাপাশি প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমুলকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই এই ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করেন তারা । একাধিকবার চেয়ারম্যান থাকায় অনেকের বিরুদ্ধে আছে নানা অভিযোগ। তাঁদেরই আবার নতুন করে মনোনয়ন দেওয়ায় দলের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নেয়। আবার এই উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আছে একাধিক ভিভাজন। ফলে মনোনয়নের ক্ষেত্রে যে গ্রুপের প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে, সেই ইউনিয়নে অন্য পক্ষের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীদের অভিযোগ, নির্বাচনে দলীয় নেতারা মঞ্চে এক রকম বক্তব্য রাখলেও ভেতরে-ভেতরে তাঁরা অন্য খেলা খেলেছেন। যার কারণে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে।
১০নং পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আব্দুস সাত্তার বুলু পরাজয়ের কারন হিসেবে দলীয় কোন্দলকে দায়ী করে বলেন,ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর অবৈধ  টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে।বিভিন্ন ওয়ার্ডের সভাপতি সাধারন সম্পাদক সরাসরি নৌকার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করেন।ডিমলা  উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু বলেন, গতবার যারা চেয়ারম্যান ছিল, তাদেরকেই আবার মনোনয়ন দেওয়ায় দলের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায়। এটা যেমন পরাজয়ের একটা কারণ,তেমন দলের একটা অংশের নেতারা  স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিল পরে অনেক চেষ্টা করেও তাদেরকে আর বসাতে পারেনি। ফলে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়ায় এই বিপর্যয় হয়।যারা নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন  তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।প্রসঙ্গত,ডিমলা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হলেন-ডিমলা সদর ইউনিয়নে আবুল কাশেম সরকার(নৌকা),পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নে আনোয়ারুল হক সরকার(নৌকা)আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নে  আব্দুল লতিফ খান(আনারস),খালিশা চাপানি ইউনিয়নে সহিদুজ্জামান সরকারকেন্জুল(ঘোড়া), ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুল হক চৌধুরী(ঘোড়া),নাউতারা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি(আনারস), বালাপাড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী(আনারস)।মাসুদ পারভেজ রুবেল,ডিমলানীলফামারী।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ ডিসেম্বর ২০২১/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here