পারভেজ রুবেল,ডিমলা নীলফামারী
ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে ডিমলার মানুষ। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিনদিন ধরে এ উপজেলায় দেখা মেলেনি সূর্যের।তিস্তা নদী বেষ্টিত এ উপজেলাটি হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় প্রতিবছর কার্তিক মাসের শেষ থেকেই শুরু হয় ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়া।আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ওয়াহেদুর রহমান জানান, এপর্যন্ত উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উপজেলার তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ১০টি চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরের বাসিন্দাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। গত কয়েকদিন মাঝরাত থেকে হিমেল হাওয়া সাথে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীত পড়তে শুরু হওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে নারী- শিশু ও বৃদ্ধরা শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। শীতে কাতর মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। গত বন্যায় চরান্ঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো গরম কাপড়ের অভাবে অসহায়। কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ।এতে তিস্তার চরাঞ্চলের লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। দুর্ভোগ বাড়তে শুরু করেছে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর। চরের বেড়িবাঁধে ছিন্নমূল মানুষগুলো অতিকষ্টে শীত নিবারণ করছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ কৃষি ও মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ার কারণে চিকিৎসাসহ সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত থাকেন।ভ্যানচালক শহর উদ্দিন বলেন ,কয়েক দিন থেকে ঠান্ডার কারণে সকাল সকাল দোকানপাট খুলছে না। সকাল গড়িয়ে মধ্য দুপুরেও মিলছেনা সূর্যের দেখা।ঘন কৃয়াশার কারণে সকালে ১০ ফুট দুরেও কোন কিছু দেখা যাচ্ছেনা।সন্ধ্যার পর গ্রাম ও শহরে দোকানগুলো ক্রেতা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। প্রচণ্ড শীতে দিনমজুররা কাজকর্মে যেতে না পারায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।এ অবস্থায় বৃত্তবানরা শীতের কাপড় নিয়ে তাদের কাছে এগিয়ে আসবেন এমনটাই আশা ভুক্তভোগিদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সারোয়ার আলম জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের শীতজনিত রোগের ঝুঁকি বেড়েছে। সেই সাথে করোনাভাইরাসের ঝুঁকিও রয়েছে মারাত্মকভাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকা করে অসহায় মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। শীত মোকাবিলায় ৭ হাজার ৭০০ শীতবস্ত্র ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।আরোও শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।চরান্ঞ্চলের মানুষের জন্য প্রয়োজনে আলাদা করে শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ জানুয়ারি২০২২/মওম