ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগ ভালো উদ্যোগ দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে-অর্থমন্ত্রী

0
269

 নিজেস্ব প্রতিবেদক

দেশীয় ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগ ভালো উদ্যোগ। এর ফলে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।৩০ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয়  সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।চলতি বছর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ২৫ শতাংশ কমে গেছে, এ বিষয় জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ অন্য জিনিস। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আরও অন্যান্যরাও আছে। সব দেশই তাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেটটা আস্তে আস্তে অনুমোদন করে। জনগণের বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এটা করা হয়, আমরাও সেই পথে যাচ্ছি। আমরা মনে করি আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ হলে সেখান থেকে আয়ও আসবে। আমাদের জনগণই সেখানে গিয়ে চাকরি করবে। আমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।‘আমরা যদি বন্ধ করে রাখি, অন্যদের অ্যালাউ না করি- তাহলে আমরা পিছিয়ে থাকবো। আমি মনে করি এটা আমাদের ভালো উদ্যোগ। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের দেশের মানুষজন অনেক বেশি সৃজনশীল আইডিয়া নিয়ে আসছেন এবং তারা বিদেশে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করছেন। বিদেশে বিনিয়োগ অন্যায় কিছু না। যদি অনুমতি না দেন তাহলে এটা চলে যাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায়। তার চেয়ে যদি আমরা অফিসিয়ালি অনুমোদন করি সেটাই ভালো। সেখানে আমরা নিয়ম করে দিয়েছি সবাইকে অ্যালাউ করা হয়নি, অ্যালাউ করা হয়েছে যারা এক্সপোর্ট করেন, নিজের অ্যাকাউন্টে এক্সপোর্টের বিপরীতে রিটেনশন মানি (জামানতের অর্থ) থাকে সেখান থেকে তাদের এক্সপোর্টের ২০ শতাংশ তারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সেই ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হয়েছে গ্রস এসেস থেকে লাইবিলিটি বাদ দিলে যে নেট এসেস সেখান থেকে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ টাকা তারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন।অর্থমন্ত্রী বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ আমাদের ওঠানামা করবে, যখন আমরা আমদানি বেশি করি তখন রিজার্ভ থেকেই সেটা ব্যয় করতে হয়। রিজার্ভ কীভাবে হয়? যখন আমরা রপ্তানি করি তখন সেই রপ্তানির ফলে অর্জিত অর্থ চলে যায় বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে। তাদের নির্দিষ্ট লিমিট থাকে, এর বেশি তারা বৈদেশিক মুদ্রা রাখতে পারে না। তখন তাদের বিক্রি করতে হয়, বিক্রি করলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা কিনে নেয়। সেভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ বাড়ে ।আগামী অর্থবছর দেশের মাথাপিছু আয় বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমার যে পূর্বাভাস দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছেন এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাবে কীসের ভিত্তিতে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২।জিডিপি বৃদ্ধির ফলে ২০ শতাংশের বেশি মানুষকে সহায়তা করছে। এ ধরনের জিডিপি আর কতদিন গ্রহণ করবো এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নতি হলে জিডিপি বাড়বে। জিডিপিতে শুধুমাত্র দেশের উন্নয়ন থাকে না, আপনি যে বাজারে জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন সেগুলোও জিডিপিতে যায়। সুতরাং কেবলমাত্র রাস্তাঘাট জিডিপিতে আসে না। জিডিপিতে জনগণের তাদের আয়-ব্যয় সব কিছুই সেখানে আসে। শুধুমাত্র রেমিট্যান্স থেকে যে আয় করি সেই আয়টি আমাদের জিডিপিতে যায় না, কিন্তু আমাদের মাথাপিছু আয় এখানে আসে। আমাদের রেমিট্যান্সও বাড়তি, রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক আছে। সেখানেও প্রবৃদ্ধি আছে। জিডিপিতেও প্রবৃদ্ধি আছে। মানুষ বাদ যাবে কিভাবে? আমরা যদি সামষ্টিকভাবে আমাদের সব জিনিস একসঙ্গে দেখার চেষ্টা করি তাহলে আমরা বুঝবো আমাদের দেশের ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে ব্যবধান যেটা ছিল, সেটি থাকারও কোনো কারণ নাই। সেই ব্যবধান নিরসনের জন্য সরকারের যাকিছু করণীয় সেগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন করে যায়।অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ইনকাম ইক্যুইটি ঠিক রাখতে সরকারের কাছে কিছু বিষয় থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে আমাদের ট্যাক্সেশন সিস্টেম। যে যতো বেশি আয় করবে তার ট্যাক্স হবে ততো বেশি। যারা ট্যাক্স দেন না তাদের জন্য স্যোসাল সেফটিনেট আছে। সেখানেও তারা বেনিফিটেড হচ্ছেন। আমি মনে করি এভাবেই সারা বিশ্বের অর্থনীতি চলে, আমাদেরও সেভাবেই চলছে। আমি মনে করি আমরা যেভাবে এগুচ্ছি তাতে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিলে, উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম ভেদাভেট থাকবে না, শহর এবং গ্রামের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। আমাদের স্বপ্ন ২০৩০ সালের মধ্যে এগুলোর বাস্তয়ন নিশ্চয়ই হবে ইনশাল্লাহ।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৩০ জানুয়ারি২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here