ভাষাদিবসের আগেই চট্টগ্রাম নগরীর সকল প্রতিষ্ঠানের নামফলক বাংলায় করতে হবে : মেয়র

0
270
আব্দুল সাত্তার
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আমাদের মাতৃভাষা বাংলা পৃথিবীতে অন্যান্য ভাষার চেয়ে গৌরবের এবং গর্বের। কারণ এই একটি ভাষায় একটি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই। আমাদের দেশই পৃথিবীর একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বাঙালীর মাঝে জাতীয়তাবাদী চেতনার উম্মেষ ঘঠিয়েছে। সেই চেতনাই জন্ম দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বায়তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের যা একাত্তরে স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। তিনি বলেন, ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর সবচেয়ে বড় উপায় হলো বাংলা ভাষার স্বাতন্ত্র্য শুদ্ধতা এবং সৌন্দর্য যাতে অক্ষুন্ন থাকে সে লক্ষে সক্রিয় থাকা। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে বাংলা ভাষাকেও আধুনিক প্রযুক্তিগত ভাষা হতে হবে নইলে বাংলাদেশ বিশ্ব সভ্যতার অগ্রগতির যুগে পিছিয়ে যাবে। মেয়র আগামী ২১ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগে নগরীর সকল সরকারী-বেসরকারী ও দোকানপাটসমূহের সাইনবোর্ড বাংলায় প্রতিস্থাপন করতে আহ্বান জানান। যদি এর মধ্যে কেউ এই নির্দেশনা প্রতিপালন না করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন। আজ মঙ্গলবার সকালে এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন চত্ত্বরে বাংলায় নামফলক প্রতিস্থাপন কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে  এবং দিলরুবা’র সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়া, ডা. শাহ আলম ভূঁইয়া, তৌহিদুল আলম কাজল, হাসান মারুফ রুমি, আসমা আক্তার, ডা. আর.কে রুবেল, শফিউদ্দিন কবীর আবিদ, সিনঞ্চন ভৌমিক, সুজন্ময় চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন জাফর, মহিম উদ্দীন, সুজাদ্দৌলা বাবুল, ছাত্রলীগ নেতা লিটন চৌধুরী রিংকু, শাহরিয়ার নিলয় প্রমুখ।মেয়র আরো বলেন, ভাষার জন্য বাংলার দামল সন্তানদের আত্মত্যাগ স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯সালে ১৭নভেম্বর। এইদিন ইউনেস্কো২১ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। আত্মত্যাগ  এবং আত্মজাগরণের গৌরবোজ্জল অধ্যায়ের কারণে মাতৃভাষা দিবসটি পালিত হয় পরম মমতায়। কিন্তু গতবছরের মত এবারো বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে অন্যান্য দিবসগুলোর মতোই মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রেও ঘটছে ছন্দপতন। বাংলা ভাষার শুদ্ধতা রক্ষায় ব্যর্থ হলে পরম গৌরবময় সেই আত্মদান বৃথা যাবে। তাই ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের পাশাপাশি দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন। ভাষার মাসে মাতৃভাষার প্রতি মানুষের ভালোবাসা জাগিয়ে তোলা এবং ভাষা সচেতনতা গড়ে তোলার কাজটি তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুরু করা এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। নবীন প্রজন্মদের জ্ঞান আকাক্সক্ষা আর স্বপ্নের আদান-প্রদান মাতৃভাষার মাধ্যমে সবচেয়ে সফলভাবে সম্পন্ন হতে পারে।সভাপতির বক্তব্যে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা বাংলায় নামফলক স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সাবেক মেয়র এর আমলে এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে অদৃশ্য কারণে তা থেমে যায়। এবারও আমরা বিদেশী ভাষায় লিখিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিলাম চসিক মেয়রের আশ্বাসে আমরা উচ্ছেদ থেকে সরে আসি। আশাকরি তিনি যে আশ্বাস দিয়েছেন তা ভাষাদিবসের আগেই বাস্তবায়ন করবেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here