শুরু হলো গৌরব এবং ভাষার মাস

0
285

নিজেস্ব প্রতিবেদক

বছর ঘুরে আবার এলো ফেব্রুয়ারি। ঐতিহাসিক ভাষার মাস, গৌরবের মাস। ১৯৫২ সালে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষাকে রক্ষা করেন। মায়ের ভাষা কেড়ে নেওয়ার এই সংগ্রামে সেদিন ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে পড়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষা নিয়ে এমন আন্দোলন আর কোথাও হয়নি। সেজন্য ফেব্রুয়ারি শুধু ভাষার মাস নয়, আত্মপ্রত্যয়ে উজ্জীবিত হওয়ারও মাস, বাঙালির গর্ব-অহংকারেরও মাস।শুরুটা ১৯৪৭ সালের পর থেকেই। পাকিস্তান কৌশলে বাঙালি জনগোষ্ঠীর ভাষার ওপর প্রথম আঘাত হানে। মায়ের ভাষায় কথা বলাও তারা বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করে। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চায় উর্দুকে। কিন্তু বাংলার মানুষ সেই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে একবিন্দু পিছু হটেনি। মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে প্রতিদিন রাজপথে চলতে থাকে মিছিল-সমাবেশ। শুরু হয় বাংলাভাষা রক্ষার আন্দোলন। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অনেক চড়াই-উতরাই পার করে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। হানাদারদের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশের গুলিতে প্রাণ ঝরে ছাত্র-জনতার। বায়ান্নর আগুনঝরা সে দিনগুলো বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।মূলত সেই দিনগুলোর মধ্য দিয়েই বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম আরও বেগবান হয়। তারই সূত্র ধরে এসেছিল ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।এ মাসের প্রথম দিন থেকে উচ্চারিত হয় সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।ভাষার জন্য এই আত্মত্যাগ পৃথিবীতে বিরল। এই আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান  এবং সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। তারপর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here