মুহিবউল্লাহ চৌধুরী
সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানকে গুলি করে হত্যা এবং সেনা সদস্য ফিরোজকে আহত করার প্রতিবাদে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে ০৫ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ ঘটিকার সময় বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের উদ্যেগে বান্দরবান বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মোঃ তারু মিয়া(অবঃ), বক্তব্য রাখেন জেলা নাগরিক পরিষদের , সহ-সভাপতি এম রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, এবং বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা নাগরিক পরিষদের সহ-সভাপতি ও পৌর শাখার সভাপতি শামসুল হক সামু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজালাল (জালাল), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আবছার, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল, প্রচার সম্পাদক মোঃ ইকবাল মাহমুদ,ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান আখন্দ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ এনায়েত হোসেন সজল, জেলা ছাত্র পরিষদের আহবায়ক আসিফ ইকবাল, জেলা মহিলা পরিষদের আহবায়ক রাহিমা বেগম, সহ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলমসহ বান্দরবান জেলা, সদর উপজেলা এবং পৌরসভা শাখার নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দগণ।এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান বলেন- ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতে ভাঙা বন্দুক তুলে দিয়ে শান্তির পায়রা উড়িয়ে শান্তি চুক্তির নামে যে চুক্তি করেছিলেন সন্তু লারমা তা সেনা অফিসার ও বাঙালি হত্যার মধ্যে দিয়ে ভঙ্গ করলেন। পাহাড়ে বসবাসরত ১২ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১টি গোষ্ঠীকে দিয়ে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। যারা চুক্তি করে সরকারের সকল সুবিধা ভোগ করার পর সরকারি বাহিনীর উপর গুলি চালায় সেই চুক্তি বাতিল করে পাহাড়ে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে পার্বত্য অঞ্চল থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন বান্দরবান জেলা সেক্রেটারি ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ বান্দরবান জেলা সহ সভাপতি সাংবাদিক এম রুহুল আমিন বলেন, সন্তু লারমার মদদে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন, দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বললে ভুল হবে, বলতে হবে সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর স্টিমরোলার চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে’কে অশান্ত করে তুলছে সন্ত লারমা।৯০- ৯৭ সাল পর্যন্ত চুক্তির পূর্বে হিসাব করলে অনেক ভালো ছিলো, চুক্তির পর স্বাধীনতা পাওয়ার পর এখন প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে জেএসএস এর নেতা কর্মীরা। সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন তারু মিয়া (অবঃ) বলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির অনুচ্ছেদ (ঘ) এর ধারা অনুযায়ী সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেওয়ার মাধ্যমে তৎকালীন শান্তিবাহিনী সকল সদস্যের আত্মসমর্পণের শর্ত থাকলেও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন (জেএসএস) তা ভঙ্গ করে চুক্তি সম্পাদনের পরবর্তী সময় হতেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন করে আসছে। ৩০হাজার বাঙালির খুনী সন্তু লারমা ও তার দল সরকারের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করে থাকে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম ,চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের নিরীহ সাধারণ মানুষের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড সৃষ্টির পায়তারা করছে, যা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহিতার শামিল। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। যেমনটা জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে করে তা এখন নিজ দেশের ভূখণ্ড রক্ষায় জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম