একের পর এক প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায়বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের আরও এক কর্মকর্তাকে বদলি

0
279

মো. সোহেল মিয়া 

একের পর এক প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলাকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের আরও এক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় পার্ক কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পার্কের ওয়াইল্ডলাইফ সুপারভাইজার মো. সরোয়ার হোসেন খানকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়েছে। এ পদে নতুন করে যোগ দেবেন হেলিম রায়হান। তিনি রাজশাহীর ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এটি স্বাভাবিক বদলি প্রক্রিয়া। একজনের স্থানে অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত এসেছে মন্ত্রণালয় থেকে।পূর্বে একসঙ্গে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান  এবং সেখানকার বন্য প্রাণী চিকিৎসা কর্মকর্তা হাতেম মো. জুলকারনাইনকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে নেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ুু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় দফায় সরিয়ে দেওয়া হয় পার্কের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জাহিদুল কবিরকে। পরিবেশ, বন  এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত চলাকালে সর্বশেষ পার্ক থেকে ওয়াইল্ডলাইফ সুপারভাইজারকে বদলি করা হলো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বেশ কয়েকটি তদন্ত দল প্রাণী মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে। সম্প্রতি মৎস্য  এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারাও এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত করছে। তদন্তকাজ নির্বিঘ্নে চালানোর জন্যই পার্কে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এই কয়েকজনকে সরানো হয়েছে। এতে সুষ্ঠ তদন্তের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে। গত ২ জানুয়ারি থেকে সাফারি পার্কে একের পর এক মরতে থাকে জেব্রা। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি দুটি জেব্রার মৃৃত্যু হয়। গত ১২ জানুয়ারি একটি বাঘ অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। খবরটি দীর্ঘদিন গোপন রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।অপর দিকে ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পার্কটিতে একটি সিংহীর মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ দাবি করে, এটি দীর্ঘদিন থেকেই অসুস্থ ছিল। সর্বশেষ দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর এটি মারা যায়। এসব ঘটনায় পরিবেশ, বন  এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৬ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব ধরনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল হাতে না আসায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আরও ১০ কার্যদিবস সময় বাড়ানো হয়।
এখানে ৩১টি জেব্রা ছিল। ১১টির মৃত্যুর পর পার্কে এখন আছে ২০টি জেব্রা। এ ছাড়া একটি বাঘের মৃত্যুর পর এখন তাদের পরিবার ৯ সদস্যের। একটির মৃত্যুর পর সিংহ পরিবারেও সদস্যসংখ্যা ৯-এ নেমে এসেছে। এদিকে পার্কে একটি বাঘ  এবং একটি সিংহ অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here