বাংলাদেশের ফুসফুস,পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অসুস্থ

0
722
আলী হোসেন জীবন
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়
আইন বিভাগ
অক্সিজেন বিহীন মানুষ বাঁচবে না , বনবিহীন পৃথিবী সুস্থ থাকবে না। নৈসর্গিক ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রূপ ও লাবণ্য হারিয়ে বিলুপ্তির পথে ধাবিত হচ্ছে। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন এর ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার  বাংলাদেশের । মোট বনাঞ্চলের ৬২% খুলনা বাগেরহাট পটুয়াখালী-বরগুনা এবং সাতক্ষীরাকে ঘিরে বিস্তৃত।সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও পরিচর্যার অভাবে বিগত উনিশ বছরে প্রায় পঁচিশ বার অগ্নিকাণ্ডে হারিয়েছে বনটির সৌন্দর্য গাছপালা , প্রাণিসম্পদ, এবং অন্তত ৮০ একর বনভূমি। সুন্দরবনের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে প্রত্যেকবার সভ্যমানব এর নিরলস ভূমিকা থাকলেও প্রতিকারের দায় এড়াতে সবাই ব্যস্ত। সর্বশেষ ,অপরাধের দায়ভার টা মৌয়াল ও জেলেদের কাঁধে চাপিয়ে হাজারো ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ২৫ কিলোমিটার  শিল্প কারখানা নির্মাণে  আইনি বাধা থাকলেও আমরা প্রকৃতিকে তোয়াক্কা না করে ১৪ কিলোমিটার এ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছি।আইনের কঠোরতা না থাকার ফলে ১৯০ টিরও বেশি ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তন্মধ্যে ২৪ টি প্রতিষ্ঠান মারাত্মকভাবে পরিবেশকে দূষণ করতেছে।ক্ষতিপূরণের জন্য নেই কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনা।গেল বছর অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ গাছ ধ্বংস হয়ে যায় বনদস্যুরা গাছ কেটে বন উজাড় করে ।তার বিপরীতে রিক্ততা পূরণের জন্য সুস্থ পদক্ষেপ নেওয়ার সময় দাবি।তিন দশক আগে আন্ধারমানিক থেকে দাসের ভারানি নৌপথে যাওয়া সম্ভব হলেও এই পথ পুরোপুরিভাবে শুকিয়ে যায় কয়েক বছরের মধ্যে ।ফলে মৌয়াল , জেলেরা এবং সাধারণ মানুষরা গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে সম্পদ নষ্ট করে।নদীপথ বিলুপ্ত না হবে বা কেন খাল খননের প্রজেক্ট পাস হতে সময় লাগে চার থেকে পাঁচ বছর ।ওয়াচ টাওয়ারের প্রস্তাব পাস হয়েছিল অস্থায়ী টা ফলে যতবার হয়েছে তা ভেঙে যায় ।আর নদী তো একা হারায়না নদীর সাথে মৎস্যসম্পদ প্রাণিসম্পদ হারাচ্ছি অবহেলার কারণে। সচেতনতার অভাবে অভয়ারণ্যের সময় জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে না।যদিও কর্তৃপক্ষ প্রায় সময় জেলেদের জীবিকা নির্বাহের বিকল্প ব্যবস্থা নেয় না।  বিলুপ্ত হচ্ছে সরীসৃপ গাছপালা পাখির মতো প্রাকৃতিক অলংকার ।বিরল প্রজাতির প্রাণী ও গাছগুলো থেকে বংশবিস্তারের জন্য যথাপোযুক্ত মাধ্যম অবলম্বন করতে হবে।সুন্দরবনের ব্যাপক প্রাণীবৈচিত্র্য তা বিদ্যমান তাই ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্ব উষ্ণায়নের যুগে সুন্দরবনের গুরুত্ব অপরিসীম স্থানীয়দের রুটি-রুজির জোগাড় হয় এখান থেকেই। সুন্দরবন নিজেও সুন্দরী ।আছে সোদর গাছও। আক্ষরিক অর্থে সে নিজগুনে সুন্দরী। সঙ্গে মিশে আছে ম্যানগ্রোভ এর রহস্যময় সৌন্দর্য, যেন প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়েছে। দিনে দুইবার জোয়ার আসে সকালে আর রাতে। জোয়ারের সময় ঢেউ উঠেছে প্রায় ছয় থেকে দশ ফুট উচ্চতার। নৌকাতেই ঢেউয়ের মজা নিতে পারেন। অল্প জলে ম্যানগ্রোভের সবুজ প্রকৃতি চোখ জুড়িয়ে দেয়।সুন্দরবন দিবস এ আসুন সুন্দরবন কে ভালোবাসি এবং পরিচর্যা করি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here