মোঃ নুরুজ্জামান সবুজ
চলনবিল অঞ্চলের এক সময়ের খরস্রোতা নদ বড়াল শুকিয়ে তলদেশে চাষ করা হচ্ছে বোর ধান। পাবনার ভাঙ্গুড়ার এই বড়াল নদীর বুক চিরে এখন বয়ে যাচ্ছে একটি নালা। সেই নালার পানি দিয়েই বেশিরভাগ অংশ চাষ হচ্ছে ধান। দীর্ঘদিন ধরেই ড্রেজিং করে এ নদে আবারো প্রাণ ফেরানোর দাবি জানাচ্ছিলেন পরিবেশবাদীরা কিন্তু সে দাবিতে কোনো ফল পাওয়া যায়নি। নদটি রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, নাটোরের বড়াইগ্রাম, বাগাতিপাড়া, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া এবং ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন এ অঞ্চলে ফসল উৎপাদন এবং অকালবন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য বড়াল নদের উৎপত্তি স্থলে ১৯৮৫ সালে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। বাঁধ নির্মাণের ফলে বড়াল নদীর পানি কমতে থাকে। সে সময় বড়ালের উৎসস্থল চারঘাট এলাকায় একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে আটঘড়িয়া দহপাড়া এবং চাটমোহরে ক্রস বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ফলে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পদ্মার পলিযুক্ত পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বড়াল নদে বন্ধ থাকায় নাব্য হ্রাস পেয়েছে। আস্তে আস্তে বড়াল নদী হয়ে যায় মৃত। এছাড়া নদীর দুই পাড়ে বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে নদ দখল করে চলেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বর্তমানে নদটি একদম শুকিয়ে গিয়েছে। নদটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে তলদেশে চাষ করা হচ্ছে বোরো ধান। চলনবিলের ভাঙ্গুড়া এলাকায় বড়ালের তলদেশে বোরো ধান চাষ উপযোগী পরিমাণ পানি তাই বুক জুড়ে এখন ধান চাষের চিত্র দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকাকে বলেন, যার জমি বা বাড়ির সামনে নদের যে অংশ পড়েছে তিনি সেখানে ধান চাষ করে থাকেন। আমি দেখে আসছি বছরের-পর-বছর এভাবেই ধান চাষ করে আসছে সবাই। পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর এবং চাটমোহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নদ রক্ষা কমিটি হয়েছে। উক্ত কমিটির নেতারা নদ খননের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেন। কিন্তু সে আন্দোলনে কোন ফল আসেনি। নদের প্রয়োজনীয় খনন সম্পন্ন হয়নি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২/মওম