ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি

0
506

নিজেস্ব প্রতিবেদক

আগামী তিন মাসের জন্য ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। ৭ মার্চ সোমবার মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে ‘ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি। সভায় এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কেউ ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেবেন না, স্টক করবেন না। কেউ অসাধু উপায় নিলে আমরা তাদের পক্ষে নেই। আজ প্যাকেটজাত তেলের চেয়ে বাজারে খোলা তেলের দাম বেশি, এটা মানা যায় না।বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে এ অজুহাতে সবাই স্টক করছেন খোলা তেল। অনেকে বোতলের তেল খোলা হিসেবে বিক্রি করছেন। কিন্তু বিশ্ববাজারের আজ যে দাম বাড়ছে সে তেল তো দু’তিন মাস পরে দেশে আসবে তাহলে কেন আজ দাম বাড়বে। আজকের দাম যেটা হবে সেই দামেই আপনারা বিক্রি করবেন।ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিল মালিকদের বাজারে তেল সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। আমরা জানি, দেশে যে পরিমাণ তেল আছে তা দিয়ে রমজান কাভার করা যাবে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম যেহেতু বেড়েছে আগামীতে সরবরাহ রাখতে অন্তত তিন মাস তেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাই। প্রতিবেশী দেশ ভারতে যেটা তিনবার ভ্যাট-ট্যাক্স সমন্বয় করা হয়েছে। সভায় মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি তসলিম শাহরিয়ার বলেন, গত বছর আমরা ১১৮০ ডলারে তেল আমদানি করেছি। এক বছর পর আজ বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১৯০০ ডলার হয়েছে। একমাস আগে তেল এসেছে ১৪৫০ ডলারে, আজ বিশ্ববাজারে দাম চড়া। দেশের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে, আমরা চার মিল একদিকে আর পুরো দেশ একদিকে। অথচ বাংলাদেশি ১৭৭ টাকায় তেল বিক্রি হচ্ছে ভারতে, সেখানে আমদানিতে ডিউটি ফি কম, আমাদের বেশি। সিটি গ্রুপের বিশ্বজিৎ সেন বলেন, কোনো কৃতিম সংকট নেই। আপনারা দেখে আসুন মিল থেকে দিনে ২৫০০ টন ডেলিভারি করছি। বাজারে কোনো ক্রাইসিস থাকার কথা নয়, তবুও ক্রাইসিস করছে। এখানে বাজার মনিটরিং জোরদার করা দরকার। পাশাপাশি আগামী কোরবানি পর্যন্ত ভ্যাট কমানোর দাবি জানাচ্ছি। পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, তেল নিয়ে মনে হচ্ছে কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। ১৪৯ টাকা পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক মিল সরবরাহ করছে না বা দেরি করছে। সরবরাহ ঠিক রাখলে বাজার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। মিল থেকে ঠিকমতো সরবরাহ করলে বাজার রিলাক্স থাকে। দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রতি ১৫ দিন পর পর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানাই। এতে প্রয়োজনে বাড়বে বা কমবে। আপনারা সরবরাহ ঠিক রাখলে সমস্যার কথা না।ব্যবসায়ীদের কথা শুনে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মনে হচ্ছে সংকট ভয়াবহ না, কিন্তু কেন ভয়াবহ হবে। আজকের কথা কিন্তু রেকর্ড হচ্ছে, সবাই যে দামের কথা বলছেন সে দামে বিক্রি করবেন। আমরা প্রয়োজনে বাজার মনিটরিং সেল বাড়াবো, খোঁজ রাখবো, সরকারকে সব জানাবো। আবার খোলা তেলে কেন বোতলের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হবে। আমি খোলার পক্ষে না সব প্যাকেটজাত হোক। ছোট পাঁচ টাকার শ্যাম্পু বিক্রি হলে ১০০/২০০ গ্রামের তেল প্যাকও হতে পারে। তিনি বলেন, খোলা তেল বিশ্বে কোথাও নেই, এটা বন্ধ করার দাবি জানাই। তেলের কোথাও সংকট নেই, তাহলে কেন দাম বাড়বে। এ মুহূর্তে ক্যাপাসিটি অনুযায়ী তেল আছে তাহলে কেন দাম বাড়বে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে আজই আমাদের এখানে কেন বাড়বে? এ কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা চোর-বাটপারের পক্ষে না। আমি কোনো অসাধু ব্যবসায়ীর পক্ষ নেবো না।

আলোকিত প্রতিদিন/ ০৭ মার্চ, ২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here