ইমরান নাজির, শিবালয় (মানিকগঞ্জ):
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ও পুরাতন ভবনের শতভাগ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের আড়াই মাস আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। আবার কোনো কোনোটিতে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখই লেখা নেই। কতগুলির মেয়াদ ২০১৭ সালেই শেষ হয়ে গেছে।
গত বুধবার সরেজমিনে হাসপাতালের নার্স ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিন পরিবর্তন না করায় রোগী ও তাদের স্বজন এবং নার্সরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তাদের ভাষ্য, আমরা অসুরক্ষার ভিরতে আছি। এখন যদি কোন বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ছোটখাটো আগুনের সূত্রপাত হয় তবে সেগুলো নিভানোর জন্য অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় তারা ঝুকির মধ্যে রয়েছেন বলে অভিমত পোষণ করেন।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবালয় ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর মজিবুর রহমান মুটোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিনের মেয়াদ সাধারণত এক বছর থাকে। মেয়াদ শেষ হলে এর ভেতরের মেডিসিনের কার্যকারিতা আর থাকে না। এর প্রেশারও কমে যায়। ফলে অবশ্যই তখন রিফিল করতে হবে।’
গত বুধবার দুপুর ১’টার দিকে হাসপাতালের নতুন ও পুরাতন ভবনের ফটক দিয়ে প্রবেশের পর দেখা যায় হাসপাতালে ‘জরুরী বিভাগ’, ‘পুরুষ ওয়ার্ড’, ‘মহিলা ওয়ার্ড’ সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ রয়েছে। ওই সব কক্ষের বাইরে দিয়ে দেয়ালে অন্তত সব মিলিযে ২২ টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিন রয়েছে যার ২টিই অকেজো ও ২টির মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হয়েছে এবং বাকী ১৮টির মেয়াদ গত বছরের ৩১ জানুয়ারি শেয় হয়েছে।
সেখানে কর্মরত নার্স ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলে লাভ কী। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।’ তবে সেখানে দায়িত্বরত একাধিক সিনিয়ার স্টাফ নার্স আলোকিত প্রতিদিন’কে বলেন, ‘আমরা খুবই ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছি। ভিতরে আগুন নির্বাপণের যন্ত্রের কোনো ব্যবস্থা নেই। বাইরে যেগুলো আছে সেগুলোরও মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর এগুলো কিভাবে চালাতে হয় আমাদের জানা নেই।
পুরাতন ভবনের ও নতুন ভবনের অপারেশন থিয়েটার, লেবার ডেলিভারী বিভাগসহ অন্যান্য স্থানে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিনের সবগুলোই মেয়াদ শেষ হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন নতুন ও পুরাতন বিভাগে যাওয়ার রাস্তার পাশ দিয়ে অন্তত ২২টি মেশিনের মধ্যে সব কটির মেয়াদ শেষ হওয়ার চিত্র দেখা গেছে। সেগুলোর ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারণও করেছে এ প্রতিবেদক।
হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচতলায় গিয়ে দেখা যায়, চারটি করে ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিন যার একটির মেয়াদ চার বছর আগে শেষ হলেও তো অপর তিনটি মেয়াদ নেই।
এ বিষয়ে হাসপাতালের দায়িত্বরত ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে জানতে আজ রবিবার দুপুরে হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: ফজলে বারী জানান, ‘এইটা আসলে আমাদের বরাদ্দ নাই, বরাদ্দ শেষ হয়ে গেছে’ ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিনের যেগুলো লাগানো আছে ঐ গুলোর বরাদ্দ নতুন করে আসলে তখন পরিবর্তন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনি সংবাদ প্রকাশ করুণ , আপনার সংবাদ প্রকাশের পরে হয়তো আমরা এ ব্যাপারে বরাদ্দ পাবো।
আলোকিত প্রতিদিন/20 মার্চ-2022/এসএএইচ