ইমরান নাজির, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) :
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের ভাকলা গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকট কতিপয় ব্যক্তি লেয়ার মুরগীর খামারের বৃষ্ঠা, মরা-পঁচা পশু-পাখি পুকুরে ফেলে মাছ চাষের ফলে গোটা এলাকার পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়েছে। এতে, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, পথচারী এবং গ্রামবাসীর চলাচলে দারুণ ব্যাহৃত হচ্ছে। ভাগারে পরিণত হওয়া পুকুরের পানির দূর্গন্ধে পার্শ্ববর্তী লোকজনের বসবাস দূরহ হয়ে পড়েছে।
এতে করে ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসীর অনেকেই নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মাছ চাষের সাথে যুক্ত লোকজন নানা হুমকি ধমকি প্রদান করায় ভূক্তভোগীরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
জানা গেছে, উক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বে অবস্থিত পুকুরে স্থানীয় বাসিন্দা সূধীর কুমার ঘোষের পুত্র সুজিত কুমার ঘোষ লেয়ার মুরগির খামার এবং মাছ চাষের জন্য মুরগির লিটার, মৃত পশু-পাখির দেহসহ বিভিন্ন নোংরা জিনিসপত্র ব্যবহার করে আসছে। পুকুরে চাষকৃত মাগুর মাছের জন্য খাদ্য হিসেবে লেয়ার খামার থেকে ড্রেন যোগে সরাসরি মুরগির বৃষ্ঠা ও সকল পঁচা-দূষিত জিনিস ব্যবহার করে আসায় দীর্ঘদিন যাবৎ গোটা এলাকা দূর্গন্ধে বসবারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থী, নারী-শিশু, বয়স্ক লোকজন ইতোমধ্যে নানা রোগে আক্রন্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন লোকজন আপত্তি জানালে মাছ চাষী সুজিত ও তার আত্মীয়-স্বজন নানা হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। ভূক্তভোগীরা এর বিরুদ্ধে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে গণস্বাক্ষরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
ভাগলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ তীব্র ক্ষোভ প্রকার করে বলেন, প্রায় বছর খানের আগে এই স্কুলের আঙ্গিনায় একটা সালিশে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বসছিলাম তখল এ দূর্গন্ধে এলাকার মানুষ বসবাস করতে না পারার বিষয়টি খামারিকে জানানো হয়। তখন খামারের মালিককে ৭ দিনের ভিতরে এ দূর্গন্ধ প্রতিকার করার জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু সে কোনো পদকক্ষেপ নেয়নি। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খামারের মালিকের ভাই হয়ায় তার বীরুদ্ধে কোন অভিযোগ জানায় না। আমার বিশ্বাস প্রধান শিক্ষক অভিযোগ জানালে সরকার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত।
এ বিষয়ে খামার ও মাছ চাষী সুজিত কুমার ঘোষ জানায়, আমি নিয়ম-নীতি মেনেই খামার ও মাছের চাষ করছি। আর দূর্গন্ধ তো সব সময় থাকে না যদি সব সময় থাকত তাহলে আমরা চলাচল করতাম কিভাবে। মাঝেমধ্যে কিছু মাছ মারা গেলে তখন দূর্গন্ধের সৃষ্ঠি হয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মো: আনিসুর রহমান বলেন, এক বছর আগে ভাকলা গ্রামের লোকজন এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছিল। পরে আর কোন কিছু শুনিনি। তবে এ ব্যাপারে আমি ঐ এলাকা পরিদর্শন করে খামারীর বিরুদ্ধে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নূর আলম আলোকিত প্রতিদিন এর এ প্রতিবেদককে জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষটি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ মার্চ-২০২২/এসএএইচ