চান্দগাঁওয়ে অপরাধ স্বর্গের হোতা ফ্রুট সোহেল

0
349
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
নগরীর চিহ্নিত কিশোর গ্যাং লিডার এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন এলাকা জুড়ে। নানান অপকর্মে জড়িত কিশোর গ্যাং লিডারদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালালেও প্রত্যাশীত সুফল এখনো দেখেননি নগরবাসী।সিএমপির চান্দগাঁও থানাধীন এলাকায় অপরাধের নেতৃত্ব দিচ্ছে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোঃ সোহেল ওরফে ফ্রুট সোহেল। ফ্রুট সোহেল নিজেকে পরিচয় দেন চান্দগাঁও ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসরারুল হক এসরাল এর অনুসারী এবং চান্দগাঁও থানা যুবলীগের সংগঠক হিসেবে  তার গ্রুপের অধিকাংশ সদস্য কিশোর ও দুর্ধর্ষ অপরাধী।
বহদ্দারহাট এলাকার ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি করেন সোহেলের দুই আস্থাভাজন মহিউদ্দিন এবং শাকিল। মোড়ের একটি কাপড়ের দোকানের আড়ালে তারা প্রকাশ্যে প্রতি দোকান থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন । এছাড়া তার সদস্যদের দিয়ে সোহেল বহদ্দারহাট মোড়সহ চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কের পাশের দোকান, নির্মাণাধীন ভবন, গার্মেন্টস, আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন খাত থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চালাচ্ছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি ছিনতাইকারী গ্রুপ। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে এবং মানব পাচার আইনে চারটি মামলা হয়েছে সম্প্রতি। বেশ কিছু মামলা রয়েছে বিচারাধীন। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে প্রকাশ্যে চলাফেরা করার পাশাপাশি দ্বিগুণ উৎসাহে অপকর্ম করে চলেছে এই ফ্রুট সোহেল। তার সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম হলো-তার ভাই রুবেল, সাকিব অরফে পাইপ পিটার সাকিব, ধামা জুয়েল, নেওয়াজ শরীফ ওরফে কিরিচ নেওয়াজ এবং পূর্ব ষোলশহর এলাকার জসিম উদ্দিন। চান্দগাঁওয়ে কিশোর জিয়াদ ও হক মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ড সবুর হত্যাকাণ্ডের আসামিরা সবাই সোহেলের সহযোগী। এমনকি চাঁদার জন্য আমজাদ নামে এক ব্যক্তির দুই পা ড্রিল মেশিনে ছিদ্র করে দেওয়ার মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটিয়েছে সোহেলের সহযোগীরা। তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মিছিল করার জের ধরে ১ এপ্রিল পূর্ব ষোলশহরের বারাইপাড়া এলাকায় তার জুয়ার বোর্ডের বিরুদ্ধে প্রসাশনকে তথ্য দেওয়ায় কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় আনোয়ার নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তার। কিছুতেই সোহেল বাহিনীর ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। চান্দগাঁও থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে ভয়ংকর এ সন্ত্রাসী গ্রুপটির লাগাম টানতে পারছে না। বর্তমানে বিদেশে পলাতক চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ বাহিনীর সাথে বিশেষ সক্ষতা রয়েছে তার। চান্দগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি, সরকারি দপ্তরগুলোতে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, গার্মেন্ট ব্যবসা, জমি দখল, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল কিংবা কোণঠাসা করাসহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রুপিং, সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় জড়িত এই কিশোর গ্যাং লিডার। আর গ্রুপ ভারী করতে কিশোর তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে সে। সিএমপির হাতে কিশোর গ্যাং লিডারদের একটি তালিকা রয়েছে। তবে এ তালিকার অধিকাংশই ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাশের ফরিদের পাড়ায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় নুরুল আলম নামের এক যুবককে। এ ঘটনায় জড়িতরা সবাই ছিল নাছিরের গ্যাং ও ফ্রুট সোহেল গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর বিভাগ) মোখলেসুর রহমান জানান, এ ধরনের কোন তথ্য পাওয়া গেলে সোহেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০৯ মে ,২০২২/ মওম 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here