সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সয়াবিন সঙ্কটে আশার আলো দেখাবেন সুবর্ণচরের কৃষকরা

0
384
একেএম ফারুক হোসাইন
ভোজ্য তেলের (সয়াবিন) সঙ্কটে কাপছে পুরো দেশ।সরকারের নানামুখী উদ্যেগেও কাটছে না সয়াবিনের সঙ্কট। বিগত কয়েক মাসে এর ব্যপক মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে চরমে।এনিয়ে জনগণের মাঝে রয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা। এমনি সময়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কৃষকরা দেখিয়েছেন আশার আলো।রবি মওসুমে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ করে চরজুবলী ইউনিয়নের স্হানীয় কৃষকরা।আর সপ্তাহ খানেক পরে জমিতে রোপণকৃত  সয়াবিন উত্তোলন করা হবে।এর পাশাপাশি ঘরে তোলার জন্য মাঠে রয়েছে মুগডাল, হেলন ডাল,মাটির নিচের মিষ্টি আলু,কাঁচা লঙ্কা,বাদাম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য  ফসল। সয়াবিনের চাষাবাদ ও কৃষকদের সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা জানতে সরেজমিনে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের বাঁধের হাটের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কথা বলে জানা গেল তাদের নানাবিধ সমস্যার কথা।এসময় সরেজমিনে কৃষি জমিতে গিয়ে দেখা গেলো কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে পচেগলে পড়ে রয়েছে সয়াবিন গাছও ফল।কাদের অবহেলায় ও কি কারণে এগুলো এভাবে পড়ে রয়েছে জানতে চাইলে উপস্থিত কৃষকরা মর্মন্ধুত বর্ণনা করেন।তারা জানান,তাদের হাতে নগদ টাকা নেই তাই তারা কৃষি কাজের শ্রমিক নিযুক্ত করতে পারেননি।অর্থসঙ্কট কাটাতে ঋণের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করেও কোন অর্থের ব্যবস্হা করা যায়নি।আর অর্থ সংকট না কাটলে জমিতেই পঁচে যাবে সয়াবিন। কৃষকদের এমন হাহাকারে এগিয়ে আসেনি কৃষি অধিদপ্তরের কেউ।এসময় অনেক কৃষককে মাথায় হাত দিয়ে সয়াবিনের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়।স্হানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন,সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা প্রান্তিক চাষীদের তেমন একটা খোঁজ খবর রাখেন না।সরকারি সহায়তা শুধু মুখ চেনা কিছু প্রভাবশালী অচাষী ব্যক্তিদের মাঝে বন্টন করে দায়িত্ব পালন করেন।শেষ কবে কৃষি কর্মকর্তাদের চেহারা দেখেছেন তারা মনে করতে পারছিলেননা।তবে বছরে একবার উপজেলা মিটিংয়ে গেলে একটা সিঙ্গারা আর সমুছা ছাড়া কিছুই মেলেনা।যেকারণে আজকে ১০ মে মঙ্গলবারের বৈঠকে তারা যাননি।ষাটোর্দ্ধ কৃষক  জাকের জানালেন, তারা শুনেছেন কৃষি কার্ড করলে ন্যায্য মূল্যে ধান সরকারি গুদামে বিক্রি করা এবং সরকারি আরো নানাবিধ সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।কিন্তু কৃষক কার্ড প্রাপ্তির তিন বছরের মাথায়ও ধান চাল বিক্রি ও  সরকারের সার বীজসহ  সরকারি কোনরকম সহায়তা না পাওয়ায় কৃষি কার্ডটি ফেলে দিয়েছেন।কার্ড থাকলে প্রতিবছর নবায়নের জন্য একশত টাকা করে দিতে হয়।কৃষক মাঈনুদ্দীন সোহাগ বলেন,বর্তমানে বাংলাদেশে সয়াবিনের সঙ্কট কাটাতে সরকার যদি প্রান্তিক চাষীদের জন্য সার,বীজ ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত পদক্ষেপ গ্রহনে এগিয়ে আসেন এবং কৃষি ঋণের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেন তাহলে এখানকার কৃষকরা বড় ধরনের সয়াবিনের যোগান দিতে পারবেন।আর এতে একদিকে দেশের মানুষের  হাহাকার ঘুচবে, দেশ লাভবান হবে অন্যদিকে সরকার-ও লাভবান হবেন।দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে সয়াবিন নিয়ে কৃষকদের যৌক্তিক দাবী পূরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানরা উদ্যেগ নেবেন কিনা?কিংবা সরকারের উঁচু পর্যায়ে হস্তক্ষেপে সমাধান হবে কি-না  সেটা কেবল সময় বলে দেবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here