প্রতিনিধি ,মিঠাপুকুর (রংপুরে)
ভোজ্যতেলের পর রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার বাজার গুলোতে এবার বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন এবং ডিমের দাম। একই সঙ্গে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। মাছের বাজারও চড়া। ডাল, আটা-ময়দার দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে কিছুটা কমেছে ফার্মের মুরগির দাম। সরেজমিন ঘুরে নগরীর বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমনটা জানা যায়। সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, চিচিঙা ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা ও আলু ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত সপ্তাহে ফুলকপি ৭০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, টমেটো ৭০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, ঝিঙে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা ও গাজর ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল। অর্থাৎ এসব সবজিতে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে রংপুরের বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১৫ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে দেশি এবং চায়না রসুনের দাম বেড়েছে। দেশি রসুন ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা ও চায়না রসুন ১২০-থেকে বেড়ে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া দেশি আদা ৯০ টাকা, চায়না আদা ১২০ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা, ছোট দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা, প্যাকেট আটা ৪৫ টাকা, ময়দা ৬০ টাকা, খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি প্রতি কেজি ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ভোজ্যতেলের উচ্চমূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও খুচরা বাজারে বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে ক্রেতাদের অভিযোগ রয়েছে। বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খুচরা বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৬০-৬৪ টাকা, ভালো মানের বিআর-২৮ চাল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে ফার্মের মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৫৫ এবং সোনালি মুরগি ১০ টাকা কমে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কক বা লেয়ারের কেজি ২৯০ টাকা। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে মাছের দামও চড়া। চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, মাঝারি তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ১৬০, মাঝারি সাইজের শোল ৫৫০-৬৫০ ও ছোট সাইজের চিংড়ি ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বাজারে কেনাকাটা করতে জলিল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম ছিল। পেঁয়াজের দাম এক লাফে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে গেছে। পণ্যের দাম কমছে না। দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু আয় তো বাড়ছে না। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে। উপজেলা বাজারের খুচরা মুদি দোকানি আশা স্টোরের মালিক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে পাইকারি বাজারেই দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে রসুনের দামও বেড়েছে। এছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট রয়েই গেছে। ভোজ্যতেল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা চাহিদা মতো বোতলজাত তেল সরবরাহ করছেন না। তিনি আরও বলেন, শনিবারে এক বিক্রয় প্রতিনিধির কাছে বোতলজাত তেল সরবরাহের কথা বলেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, এক কেজি আটার ৫০ প্যাকেট নিলে ২ লিটারের ৯ বোতল সয়াবিন তেল দিয়ে যাবেন। তার শর্ত মেনে নেই। আজ তেল দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত দোকানে তেল সরবরাহ করা হয়নি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ মে ,২০২২/ মওম