লক্ষ্মীপুরে চাঁদাবাজির মামলা করায় প্রবাসীর বাড়ির  প্রাচীর ও ঘর ভাঙচুর, হুমকির অভিযোগ

0
298

এস এম বেলাল

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুরে (১৫ নম্বর ওয়ার্ড) বাড়ি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক প্রবাসী। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় নির্মাণাধিন সীমানা প্রাচীরের দেওয়াল ও ঘর ভাঙচুর করেছে একটি প্রভাবশালী মহল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করায় ওই মামলা প্রত্যাহারে প্রবাসীকে অব্যাহত চাপ এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগরের (৩ নম্বর ওয়ার্ডের) স্থায়ী বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী তানজিল হোসেন পরান চৌধুরী এ ঘটনার জন্য ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা কাজল ভূঁইয়া (৫৫), সোহাগ পাটওয়ারী (৩৫),শামীম পাটওয়ারী (২৮), রিয়াদ হোসেন (৩৫), বাহার হোসেন (৪৭), আরাফাত ভূঁইয়া (২৫), আছিফ হোসেন, রিদন ভূঁইয়া (২৪), ইফতেখার (৪৫), জেসমিন আক্তার (৪২), শাহিন আক্তার (৪৩), রাজিব হোসেন (৩৮), সায়েফ হোসেন (৪২)সহ আরো অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। এ ঘটনায় তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (সিআর-৪৮৭/২২) ও লক্ষ্মীপুর সদর থানায় জিডি (নং-৬৩০/২২, তাং-১২/০৫/২২) দায়ের করেছেন। প্রবাসী তানজিল হোসেন পরান চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সনে আমি লক্ষ্মীপুর সদর থানার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর মৌজার ১২৮৫নং খতিয়ানের ৮৬৬৬ দাগে ২৮ শতাংশ জমি ক্রয় করি। ইতোমধ্যে ওই জমি জমা-খারিজ খতিয়ান সৃজন করে খাজনা এবং পৌরসভার কর পরিশোধ করে হোল্ডিং নাম্বারের মাধ্যমে সেটি ভোগ দখল করে আসছি। ওই জমিতে কাজ করার জন্য লক্ষ্মীপুর পৌরসভার স্মারক নং- ল:পৌ:/প্রশা:/বি:২০১৯/৫৩৪, তাং- ১৮/০৪/২০১৯ইং মূলে নক্সা ও কাজের অনুমোদন নেই। সর্বশেষ ১০/০৫/২০২২ইং তারিখে পুনরায় বর্ধিত নক্সা অনুমোদনের জন্য টাকা জমা দিলে ১২ মে তারিখে তাও পৌর মেয়র ও প্রকৌশল শাখা থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ওই জমিতে নির্মাণ কাজ করার প্রস্তুতি নিলে পুনরায় অভিযুক্তরা পূর্বে দাবীকৃত চাঁদার ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করে আমি নির্মাণ কাজ করতে গেলে ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দেয়। ১৮ মে ওই জমিতে কাজ করতে গেলে নির্মাণ শ্রমিকদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে নির্মাণাধিন দেওয়াল ও ঘর ভাঙচুর করেন তারা। ওই জমিটি কেনার পর থেকেই অভিযুক্তরা আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চলতি বছরের ৪ মে আমাকে বেদম মারধর করেন। তাদের আঘাতে আমি দীর্ঘদিন সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। পুলিশ গিয়ে আমাকে আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন। অভিযুক্তরা ওই সময় আমাকে দা, ছেনি, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, হাতে পাঞ্জা লাগানো চাকু, হকিস্টিক, রামদা নিয়ে চাঁদার টাকা দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখায়।  আমি রাজী না হওয়ায় তারা জমিটির সাইড ওয়াল ভেঙ্গে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। ওই সময় তারা আমাকে হত্যারও চেষ্টা চালায়। ওই ঘটনায় আমি লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-সদর এ একটি চাঁদাবাজির মামলা (সিআর-৪৮৭/২২) দায়ের করি। ওই মামলাটি বিজ্ঞ আদালতের আদেশে সদর থানা তদন্ত করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলা প্রত্যাহারে অভিযুক্তদের অব্যাহত চাপ ও হত্যা করে লাশ গুমের হুমকির মুখে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরান চৌধুরী লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি জিডি করেন (নং-৬৩০/২২, তাং-১২/০৫/২০২২)। ১১ মে ভূক্তভোগীর বসত বাড়িতে গিয়ে তারা প্রকাশ্যে এ হুমকি দেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়। জিডির বিষয়টি সদর থানার পুলিশ তদন্ত করছে। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেও কাজল ভূঁইয়ার সাক্ষাত পাওয়া যায়নি। গতকাল তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিতে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। সেটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। পরান চৌধুরীকে হুমকির ঘটনার জিডি ও আদালতে দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলা ও জিডির তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

আলোকিত  প্রতিদিন / ২৫ মে ,২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here