ভুমিহীন উচ্ছেদে সময় বাড়ানোসহ পুর্নবাসনে মানববন্ধন

0
299
মোহাম্মদ জুবাইর
চট্টগ্রামে দীর্ঘ ৩৫বছরের পুরনো বসতভিটায় অবস্থানকারীদের নোটিশবিহীন উচ্ছেদ-কপাল পুড়লো শতাধিক ভূমিহীন। উচ্ছেদের ফলে বসতভিটা হারাচ্ছেন ৫শ মানুষ যারা হতদারিদ্র এবং অসহায় মানুষ। ভুমিহীন উচ্ছেদ করার বিরোধিতা ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনে বসবাসকারী সকলেই উপস্থিত ছিলেন। নগরের মেইন রোড সংলগ্ন বায়েজিদ বোস্তামী ড্রাইভার কলোনী উচ্ছেদের সময় বাড়ানো এবং বসবাসকারী ভুমিহীনদের পুর্নবাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন।নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য অন্তত ১মাসের সময় দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান। ২৬ মে,সকাল ১০টায় ২২ইং মেইন রোড সড়ক পদক্ষিন করে তাদের স্থাপনার সামনেউ মেইন রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এবং সেইসাথে  মেয়র বরাবর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসক,চট্টগ্রাম বরাবর  দরখাস্ত অনুলিপিও পেশ করেন। ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি করে, বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার ড্রাইভার কলোনীতে ৬০টি পরিবারের প্রায় চার শতাধিক লোকের বসবাস। আমরা দেশের বিভিন্ন জেলার নদী ভাঙ্গা এলাকার ভুমিহীন ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী । ১৯৮৮ ও ৯১ সালের বন্যা,ঘুর্নিঝড় ও নদী ভাঙ্গার সর্বহারা ক্ষতিগ্রস্থ রয়েছে অনেকেই। তখন থেকেই আমরা মেহনতি ও শ্রমজীবী মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ড্রাইভার কলোনীতে সরকারী পরিত্যক্ত খাস জায়গায় বসবাস করে আসিতেছি।  সম্প্রতি সিটি করপোরেশন উক্ত জায়গায় জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় নালা সংস্কারের জন্য প্রায় আগাগোড়া ২০ফুট জায়গা অধিগ্রহণ করে। যা গত  ২৪মে  মঙ্গলবার হঠাৎ করে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র  গিয়াসউদ্দিন উক্ত জায়গার উপর দিয়ে ডিওএইচএস আবাসিক এলাকার সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।এবং উক্ত জায়গাটি জরিপ করে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তদের। ভারপ্রাপ্ত মেয়র হঠাৎ এমন আকষ্মিকভাবে মানবিকতা দিক বিবেচনা না করে সময় না দিয়ে আমাদের আকষ্মিক এমন ঘোষনায় আমরা বসবাসকারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।  মানসিক আঘাত ও দুশ্চিন্তায় বাঁচা আর মরা একই সমান,অর্থ সামর্থ না থাকার কারণে যেন নিরুপায়। সরকার যেখানে ১২লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় সুবিধাসহ সবকিছুই দিয়েছে সেই জায়গায় আমরা জন্মসূত্রে  এদেশের নাগরিক হয়েও কেন? কোন? রহৎজনক? আর কি  কারণে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হব? ও সামান্য মানবিক সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হবো? আমাদের আরজি আমাদেরকে নিজেদের উদ্যেগে নিরাপদে উক্ত জায়গা থেকে সরে যাওয়ার জন্য অন্তত মানবিক বিবেচনায়  শ্রমজীবী ভুমিহীন হতদরিদ্র ও জীর্ণশীর্ণ দুর্দদশার কথা চিন্তা করে অন্তত ১মাসের সময় দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করতেছি। সরেজমিন দেখা যায়, উক্ত জায়গাটির কিছু অংশ সরকারি খাসভুমি ও শহরের জলবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ও খাল-খনন প্রজেক্টের কাজে বাঁধা প্রতিবন্ধকতার কারণে একাংশ ভাঙ্গার নির্দেশ ও পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থরা হতাশ ও নিরুপায়।এবং যে কোনো মুহুর্তে ভেঙ্গে দেওয়ার আতঙ্কে দিগ্বিদিক হারিয়ে দিশেহারা। এবং উচ্ছেদে ভুক্তভোগীদেরর দূঃখ আহাজারী আর্তনাদ যেন আকাশ বাতাস ভারী করে তুলে।  এ-বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ গিয়াসউদ্দিন বলেন, জলবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে। সেজন্য  রাস্তাটি মাঝখান দিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাদের সুবিধার্তেই আলোচনা সাপেক্ষে মানবিকদিক চিন্তা করেই একপাশে দিয়ে নেওয়া হবে তারা যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। যাতে রাস্তাটিও হোক জলবদ্ধতা নিরসনের কাজও হোক এবং তারাও বেশি যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। আমাদের সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত ভবিষ্যতে অন্যকোন স্থানে তাদেরকে অগ্রঅধিকার দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকাও দিতে বলছি। অনেক পূর্বেই তাদের নোটিশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত যেহেতু তারা আছে তাই সময় চাইতেই পারে। এটা মেয়র  সিদ্ধান্ত দিবে। আর আতংকে থাকবে কেন? আতংকে থাকার তো কোন বিষয়ই নাই।  কোন অবৈধ জায়গায় যদি কেউ বসবাস করে আর প্রশাসন বা আইনগত নির্দেশে বলে যে,তাদের দাবিদাওয়া থাকলে পূর্ণর্বাসনের বিষটা দেখা হবে এটাই হল বিষয়। আপনারা সাংবাদিক বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্ট করবেন,চট্টগ্রামে জলবদ্ধতার নিরসনে যারা বাঁধা ও অহেতুক অযুক্তিযুক্ত ভাবে নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করছে সেটাও দেখা জরুরি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সেটাও চিন্তা করা উচিত। আপনরা মাঠে গিয়ে সরজমিনে দেখেন- আসলে কি করা হচ্ছে? আর তাদের সাথেই কি কথা হয়েছে? তাদেরকে কি কি সূযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে?  জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন সবকিছুই । আর মানবিক দিকচিন্তা করেই মসজিদের পাশ দিয়ে রাস্তা ও মাত্র ৭টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হবে।এতে মসজিদও রক্ষা হবে।আরও বেশি ভাঙ্গার কথা ছিল এ-ব্যপারে আমি তাদের অনেক সেভ করছি না হয় সব উচ্ছেদ হত।  তাছাড়া এগুলো সেনাবাহিনীর কাজ তারা নিয়মের বাইরে কিছু করবে না ও মানবেনা। নিয়ম অনুযায়ী তাদের অনেক বেশি ক্ষতি হবে এক পর্যায়ে সব ভাঙ্গা পড়বে। আমরা যদি রোহিঙ্গাদের স্থান দিতে পারি আমিও চাই ওরাও কোন রকম থাকুক কারণ আমারি ভোটার। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডসিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন,বিষয়টি আমার অবগত না তবে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে জলবদ্ধতা নিরসন,খাল-খনন ড্রেনেজ প্রকল্পের পরিচালক-সেনাবাহিনী ৩৪ বিগ্রেড লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারবেন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নী বলেন,এ-বিষয়ে আমি কিছুই জানি না আর বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কেউ অবহিত করে নাই কিংবা জানাইও নাই। তবে নগর পিতা মেয়র  বরাবরে সরাণাপন্ন হয়ে তারা বিষয় নিয়ে কথা বলে উপযুক্ত সমাধান পেতে পারে। বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্থরা সবিস্তারে জানিয়ে মানবিক সময় ও সহায়তাও পেতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে জলবদ্ধতা নিরসন,খাল-খনন ড্রেনেজ প্রকল্পের পরিচালক-সেনাবাহিনী ৩৪বিগ্রেড লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, এটা ২০১৯সালে দাগ দেওয়া আর তাঁরা তো ভাল করেই জানে ভেঙ্গে দেওয়া হবে। তারপরও তারা না সরে দীর্ঘ ৩বছর তারা অন্যায়ভাবে দখল ও ভোগ করেছে । অবৈধ দখলের আবার কিসের নোটিশ?এটা তো নতুন কিছু না যে,তাদেরকে আবারও নতুন ভাবে জানতে হবে।সবাই নিয়ম অনুযায়ী খালের জায়গা খালি করে দিচ্ছে কিন্তু তারা কেন প্রতিশ্রুতি মত খালি না করে,উল্টো সময় চাওয়ার তো কোন কারণ হতে পারেনা। নোটিশ তো তাঁদের ২০১৯সালেই দেওয়া। আমরা তো ফরমালি কোন এডিশন করছি না। আমরা তো ঐখান দিয়েই কাজ করতেছি এটাতো তারা দীর্ঘদিন ধরেই দেখতেছে। এমন-তো-না,যে হঠাৎ করে কুড়াকুড়ির কাজ শুরু করছি তা-তো তারা জানে না। তাঁরা তো ভাল করেই জানে যে,কোন কাজটার পর কোন কজটা করবে এবং কখন ভাঙ্গা কোন? দিন কেন? কেন ভাঙ্গা পড়বে? সরকার আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে খালের কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য যাতে কোন প্রকার অত্র এলাকা যাতে জলবদ্ধতার সম্মুখীন না হয়।  মসজিদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন,তবে মসজিদ কি আরেক জায়গায় করবে কি করবে না এটা ঐ এলাকার বাসিন্দাদের উপর নির্ভর করে। যদি খালের উপর ভাঙ্গা  সম্ভাবনা থাকে তাহলে স্থানীয় তাদেরই উচিৎ হবে অন্য জায়গায় ভাঙ্গার আগেই স্থানান্তর করা।এটা স্থানীয় তাদেরই দায়িত্ব।এটা আমার দায়িত্ব না। তবে একদিকে সরকারি জায়গায় অন্যদিকে খাল দখলে যদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কে প্রদর্শন করা হয়। তা কোনভাবেই শুভনীয় নয়। জনবিঘ্নতা সৃষ্টি করে আর খালের উপর মসজিদ করে ধর্মীয় অনুভূতি প্রকাশ কতটা যুক্তিযুক্ত ও গ্রহনযোগ্য? এর পেছনে প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে ও রহৎসে যেন জনমনে নেতিবাচক কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে উপযুক্ত যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ।আমিও ধর্ম অনুসরণ করি, আমিও চাই বিকল্প কোন উপায়ে আল্লাহর ঘর মসজিদ থাকুক।
আলোকিত  প্রতিদিন / ২৮ মে ,২০২২/ মওম 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here