নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আর মাত্র ২০ দিন পর আমরা স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। চট্টগ্রামবাসী তাকিয়ে রয়েছে টানেল উদ্বোধনের দিকে। আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা চলমান রয়েছে। এরপরও বকাউল্লাহরা বকেই যাবেন, সমালোচনা করেই যাবেন। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গড়ায় বিশ্বাসী, তিনি গড়েই যাবেন উন্নয়ন করেই যাবেন। ৪ জুন শনিবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ‘চা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ চা বোর্ড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এম শাহ আলম, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ওমর হান্নান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চায়ের উৎপাদন বাড়ানো নিয়ে আমরা চিন্তা করি। জাতির পিতার স্পর্শ পেয়েছে এই চা শিল্প। তার অবদানের কারণে এ শিল্প অনেক এগিয়েছে। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখান ইতিহাস হয়েছে ও সাফল্য এসেছে। প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ শতাংশ চা উৎপাদন বাড়ছে। তবে মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম এজন্য রপ্তানি করতে পারছি না। তিনি বলেন, উত্তর এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর নিজের ভাবনা থেকে চায়ের চাষ শুরু হয়। আজ অভ্যন্তরীণ চাহিদার ১৫ শতাংশ আসছে। চা পাতার কারণে আজ উত্তর এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। টিসিবির লাইনে এখন উত্তর এলাকায় মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। সার্বিকভাবে আমাদের সবাইকে নিয়ে এগুতে হবে। এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক আছে তাদের সন্তানদের ট্রেনিং করে দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়টি দেখতে হবে। আমাদের কিছু চা পাতা আছে যেগুলো ইংল্যান্ডের বাজারে পাওয়া যায়। এখন দেশে দিনে ১০ কোটি কাপ চা খাওয়া হয়। চা মালিকদের বলেন, চা বাগানে ভালো মানের রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে। এগুলো ব্যবসার জন্য ভালো। ক্রেতাকে রিসোর্টে রেখে এক বেলা খাওয়ালে, কারখানাগুলোর পরিবেশ দেখালে লোকসান নেই। এতে ক্রেতারা খুশি হয় এবং নিজ পণ্যের ব্র্যান্ডিং হয়। এসময় হাসতে হাসতে মন্ত্রী বলেন, আমার এক পরিচিত জন আমাকে জানালেন এখানে (চা বাগানে) হানিমুন রিসোর্ট আছে। আমারও কৌতূহল হলো তাহলে তো দেখার দরকার হানিমুন রিসোর্ট। আমি তাকে বলেছি দুবছর পর আমার বিবাহের ৫০তম বছর হচ্ছে। ৫০তম বিবাহবার্ষিকীতে সেখানে নিজ স্ত্রী নিয়ে যাবার ইচ্ছে আছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, অনাবাদি এবং ক্ষুদ্রাকার জমিতে চা উৎপাদন এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমাদের চা শিল্পের উন্নয়নে ৯০ ভাগ অবদান শ্রমিকদের। আমরা শ্রমিকদের আরও ট্রেনিং দিয়ে তাদের দেশের বাইরে পাঠাতে উদ্যোগ নিতে চাই। এতে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের জিডিপির সাইজ এখন ৪১৬ বিলিয়ন ডলারের। সারাবিশ্বে ফরেন কারেন্সি সংকট রয়েছে। করোনার সময়েও সংকট ছিল। সে অবস্থার মধ্যেও আমরা ভালো করেছি। আমরা মধ্যম ও উন্নত মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হবো সবার অবদানে। চা শিল্প আমাদের লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।আয়োজিত অনুষ্ঠানে চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু আমাদের সম্মানিত করেছিলেন। জাতির পিতার চা শিল্পের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে ৪ জুনকে চা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে মন্ত্রী সভার বৈঠকে। বর্তমানে চা বাগানের মোট শ্রমিকের সংখ্যা এক লাখ ৪৩ হাজার ৯৭জন আর মোট ক্ষুদ্রায়তন চা চাষির সংখ্যা প্রায় আট হাজার জন। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, সাইপ্রাস, ব্রুনাই, গ্রিস, চীন, জাপানসহ ২৩টি দেশে চা পাতা রপ্তানি হচ্ছে। এতে স্বল্পমেয়াদী (২০১৬-২০২০) মধ্যমেয়াদী (২০১৬-২০২৫) এবং দীর্ঘমেয়াদি (২০১৬-২০৩০) মোট ১১টি কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। পথনকশায় ২০২৫ সাল নাগাদ ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা-উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন / ০৪ জুন ,২০২২/ মওম