হাতিয়ার উপকূলে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ-তবুও কমছে না দাম

0
307
একেএম ফারুক হোসাইন:
“আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির অভাবে ভারতীয় জেলেরা হাতিয়া ঘাট থেকে ৪০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ থেকে অবাধে ইলিশ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।” -আবু বকর সিদ্দিক মিজান।
৯৯ মন ইলিশ মাছ নিয়ে গত ২৬ জুলাই মঙ্গলবার নোয়াখালী জেলার হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাটে ইলিশ বোঝাই ট্রলার। আর সে মাছ একুশ লক্ষ সাতাশি হাজার টাকায় কিনে নেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার  বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু বকর সিদ্দিক মিজান। এর আগে ২৫ জুলাই ৮৬ মন ইলিশ চেয়ারম্যান ঘাটে আসে আরেকটি ট্রলার। দাম ভালো পাওয়ায় উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকার জেলেরা এ ঘাটে ট্রলার ভেড়ায়। এনিয়ে গত চারদিনে প্রচুর ইলিশ নিয়ে চেয়ারম্যান ঘাটে ভিড়ছে অসংখ্য ট্রলার। এতো ইলিশ আসার খবরেও বাজারে খুব একটা প্রভাব পড়ছে না।বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় ৫০০ গ্রামের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা দরে।৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির ওপর ইলিশের দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ (শত)  টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এ দাম খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। দাম বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে সরেজমিন চেয়ারম্যান ঘাটে গিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সাথে কথা হয়। কেনো ইলিশের  ভরা মওসুমে ইলিশের দাম কমছে না জানতে কথা হয় মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার আবু বকর সিদ্দিকের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান,ইলিশ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে একটি ট্রলার পাঠাতে প্রয়োজনীয় লোকবল,তাদের কমপক্ষে দশদিনের খাদ্য,জ্বালানি( ডিজেল)  জ্বালানি বাবদ ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার খরচ পড়ে। এসকল খরচের বাহিরে আছে সরকারের নানা ধরনের ভ্যাট ও চাঁদা। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হলে পুরো ট্রলার খালি হাতে ফিরতে হয়। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে জেলে এবং ব্যবসায়ীরা। দেখা গেলো পাঁচটি ট্রলারে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পাঠালাম এর মধ্যে দুটি ট্রলারে মাছে বাকীগুলো খালি হাতে ফিরছে। কেনো জেলেদের গভীর সমুদ্র থেকে খালি হাতে ফিরতে হয় এমন প্রশ্নে মিজান বলেন,অনেক সময় জ্বালানি ফুরিয়ে যায় অথবা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু এ সমস্যার বাহিরেও আরেকটি বড়ো সমস্যা ভারতীয় জেলেদের উৎপাত। আপনি হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট থেকে ৪০ কিঃমিঃ দক্ষিণে গেলেই দেখতে পাবেন নদীর মোহনায় ভারতীয়  জেলেরা অবাদে মৎস্য চুরি করছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে। আমরা চাইলেও তাদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। গতিশীল ট্রলার,প্রযুক্তি এবং অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় জেলেদের মাছ শিকারের কারণে আমরা খালি হাতে ফিরছি।মাঝে মাঝে কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেলে ভারতীয় জেলেরা সটকে পড়ে। তাই একারণে কোস্টগার্ডের পাশাপাশি নৌবাহিনীর নিয়মিত টহল নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবিলম্বে ভারতীয় জেলেদের উৎপাত বন্ধে প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আবু বকর সিদ্দিক মিজান। তিনি আরো বলেন,ইলিশের দাম কমাতে হলে এসকল সমস্যার পাশাপাশি সরকারের এ ক্ষেত্রে ভতর্কি দিতে হবে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের সহজ সরল সুদে ঋণের ব্যবস্হা নিশ্চিত করতে হবে। ঘাটে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি হাবিব জানান,ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে কারণে কাঙ্ক্ষিত বরফ মিলছে না। এতে প্রচুর ইলিশ পঁচে যায়। যার কারণে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তিনি সরকারের কাছে দাবি করেন এখানে চেয়ারম্যান ঘাটে যেনো একটি মৎস্য হিমায়িত কারখানা করে দেয়। ইলিশ ছাড়াও অন্যান্য মাছ সংরক্ষণে ও বাজারজাতে ভূমিকা রাখবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৩০জুলাই ,২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here