ইসরাফিল নাঈম:
বৃষ্টি না হওয়ায় অনাবাদী রয়েছে ভোলার চরফ্যাশনের ৫১ হাজার হেক্টর আমন ধানের কৃষি জমি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায, এ বছর আমন ধান লাগানোর সময় প্রায় পেরিয়ে গেলেও বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। চরফ্যাশনে ৭২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত বীজতলা চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমির। বৃষ্টি না হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ৫১ হাজার হেক্টর কৃষি জমি অনাবাদী রয়েছে। খরিপ-২ মৌসুমে অর্থাৎ বাংলা আষাঢ় মাসের ১ তারিখ (১৬ জুলাই) থেকে আমন বুননের সময় থাকলেও এখন চলছে শ্রাবণ মাসের শেষ সপ্তাহ। এ সময়ে ভরা বর্ষার মৌসুম থাকলেও অন্য বছরের মতো স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা মিলছে না। কখনো কখনো দু-এক পশলা বৃষ্টি পড়লেও তা কৃষকদের কোনো কাজেই আসছে না। উপজেলার দুলারহাট, শশীভূষণ, দক্ষিণ আইচাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি না থাকায় বেশির ভাগ জমিই অনাবাদী হিসেবে পড়ে আছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের আমন বীজতলাগুলো প্রখর রোদে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। এসব বীজতলার চারা রোপণ করলে পর্যাপ্ত ফল নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে বর্ষাকাল শেষপ্রান্তে চলে আসলেও আষাঢ- শ্রাবণ মাসেও নেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। একই সঙ্গে প্রচণ্ড খরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিশূন্য আবহাওয়ায় রোদের তাপে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। তীব্র তাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এমন প্রতিকূল আবহাওযার করণে এখনও অনাবাদী চরফ্যাশনের ৫১ হাজার হেক্টর কৃষি জমি।
চাষিরা বলছেন, আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত। এবার মৌসুমের শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা না যাওয়ায় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ক্ষেতে সেচ দিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে। এ ছাড়া ক্ষেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে গেলে ফলন কমার বিষয়টিও কৃষকের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। জাহানপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ শহিদ ও শিমুল জানান, প্রতি বছর আষাঢ মাস থেকে শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টি চলে সেই সাথে চলে আমনের আবাদও। কিন্তু ভরা বর্ষাকালের প্রখর রোদে জমি রোপণ করতে পারি নাই। অনাবাদী রয়েছে জমি। পানি শুকিয়ে জমি চৌচির হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবে বৃষ্টি হলে এত দিন আমন বুননের জমি তৈরি হয়ে যেত। বৃষ্টি না হওয়াতে সময়মতো ধানের চাড়া রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, শুধু চরফ্যাশন নয় বৃষ্টির অভাবে দেশের অনেক জেলার আমন আবাদে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। তবে আমন মৌসুমের ধান রোপণের সময় খুব বেশি পিছিয়ে যায়নি। চলতি আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত রোপণ করা যাবে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে বলে তিনি আশা করেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০৬ আগস্ট ,২০২২/ মওম