আজ রবিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে লাশ হলো জামালপুরের এক পরিবারের ৪জন নিহত 

আরো খবর

মাসফি আকন্দ: 
বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে লাশ হলো জামালপুরের এক পরিবারের ৪জন। নিহতরা হলেন-  কনের মা ফাহিমা বেগম, কনের খালা ঝর্না বেগম ও খালাতো ভাই জাকারিয়া (৩), বোন জান্নাত (৬)।  একই পরিবারের ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকের মাতম চলছে নিহতের গ্রামের বাড়িতে।
নিহতের স্বজনরা জানান- ভাগ্নি রিয়া মনির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার জামালপুরের মেলান্দহের আগ পয়লা গ্রাম থেকে আশুলিয়া যান ঝর্ণা বেগম,  তার স্বামী জাহিদ আকন্দ এবং তাদের সন্তান জাকারিয়া (৩) ও জান্নাত (৬)। শনিবার বিয়ে শেষে স্ত্রী সন্তানদের রেখে বাড়ি ফিরে আসেন ইজিবাইক মিস্ত্রী জাহিদ। সোমবার দুপুরে বৌভাত শেষে আশুলিয়া যাবার পথে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় গার্ডার দূর্ঘটনায় নিহত হন ৫জন। এর মধ্যে  ঝর্ণা বেগম ও তার সন্তান জাকারিয়া ও জান্নাতের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আগ পয়লা গ্রামে এবং ঝর্ণা বেগমের বড় বোন ফাহিমার বাড়ি ইসলামপুর উপজেলার লাউদত্ত গ্রামে।  দূর্ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া নব দম্পতি হৃদয় হাসান ও রিয়া মনি গুরুতর  আহতবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হঠাৎই এমন মৃত্যুতে হতবাক নিহতদের স্বজনসহ এলাকাবাসী। স্ত্রী ও সন্তানদের হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন জাহিদ আকন্দ।
নিহত ঝর্না বেগমের স্বামী জাহিদ আকন্দ বলেন- স্ত্রী ভাগ্নি রিয়া মনির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার আশুলিয়া যান। শনিবার আশুলিয়ায় বিয়ে সম্পন্ন শেষে স্ত্রী সন্তান রেখে তিনি বাড়িতে চলে আসেন।  পরে গত সোমবার বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সবাই উত্তরা যায় । অনুষ্ঠান শেষে নব দম্পতি (হৃদয় ও রিয়ামনি), কনের মা ফাহিমা, কনের খালা ঝর্না ও খালাতো ভাই জাকারিয়া (৩), বোন জান্নাত (৬), বরের বাবা রুবেল মিয়া (গাড়ি চালক) প্রাইভেটকারে আশুলিয়া ফিরছিলেন। এ সময় উত্তরা বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার পরে প্রাইভেটকারটি চাপা পড়ে। এতে সৌভাগ্যক্রমে নব দম্পতি বেচে গেলেও ঘটনাস্থলেই মারা যান বাকি ৫জন।
মঙ্গলবার মেলান্দহের আগপয়লা গ্রামে নিহত ঝর্ণা বেগমের বাড়ি ও ইসলামপুর উপজেলার লাউদত্ত গ্রামে ফাহিমার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।স্বজনরা জানিয়েছেন- ঝর্ণা বেগম ও তার দুই সন্তানের মরদেহ দাফন করা হবে মেলান্দহ উপজেলার আগপয়লা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে আর ফাহিমার মরদেহ দাফন হবে ইসলামপুর উপজেলার লাউদত্ত গ্রামে।
নিহত ঝর্না বেগমের স্বজন আব্বাস মিয়া বলেন- সরকারের একটি বড় প্রকল্পের কাজে যাদের গাফিলতির কারনে অকালে এই তাজা প্রানগুলো ঝড়ে গেলো। আমরা তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।সব কার্যক্রম শেষে দ্রুত লাশ ফেরত আনার দাবি জানিয়েছে নিহতদের স্বজনেরা। ঝর্না বেগমের স্বজন হাসনা বেগম বলেন- কালকে দুপুরে মারা গেছে।  এখনো আমরা লাশ পাইলাম না। আমরা দ্রুত লাশটা চাই। আমরা তাদের দ্রুত দাফন করতে চাই।ঝর্না বেগমের আরেক স্বজন কনিকা বেগম বলেন- আমরা কোনোদিন কল্পনা করি নাই এইভাবে আঙ্গরের আদরের ধনগুলা মারা যাবো। এহনো আঙ্গর বিশ্বাস হইতাছে না।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ আগস্ট ,২০২২/ মওম
- Advertisement -
- Advertisement -