খানসামায় চিকিৎসা সেবা অব্যবস্থাপনার কারনে নবজাতকের মৃত্যু; নার্স বদলী

0
270

ফারুক আহম্মেদ:

মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হাসপাতাল। সেই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় হয় মৃত্যু। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে খানসামা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আমতলী এলাকার ফয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী ফতেজা বেগম (৩৭) এর প্রসব বেদনা উঠলে মা ও শিশু কল্যাণ   কেন্দ্রে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা।

১৯ আগস্ট শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ ঘটিকায়। রাত ১০ ঘটিকায় অনেক বেশি ব্যাথা উঠলে রোগীর পরিবারের লোকজন বার বার বলেন, আমাদেরকে রিলিজ দেন আমরা অন্যত্র নিয়ে যাব। নার্স বলেন সমস্যা নাই এখানেই ডেলিভারি করা যাবে। এরপর একটি ইনজেকশন পুশ করে প্রসূতি মহিলাকে। রাত ১ টায় ভূমিষ্ঠ হয় নবজাতক। কিছুক্ষণ পর নবজাতক কালো হওয়া শুরু হয় এবং পরে নবজাতকের মৃত্যু ঘটে।পরিবারের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসার কারনে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে নবজাতকের মৃত্যু হয়।

প্রসূতির বোন বলেন, হাসপাতালের নার্স আমাকে জানান জরায়ু নরম আছে নরমাল ডেলিভারি হবে। কিন্তু আমি বলি আমার বোনের বয়স বেশি, আমরা রিস্ক নিতে চাই না। যদি না পারেন তাহলে ছেড়ে দেন। আমরা ডাক্তার চাইছি কিন্তু নার্স বলেন আমরাই পারব। রাত সাড়ে দশটায় ডেলিভারি রুমে ঢুকানো হয়। আমাদের দুই বোনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ওই রুমে। মাত্র এক নার্স ও এক আয়া দায়িত্বে থাকেন। কিছুক্ষণ পর পর ডেলিভারি রুমে বাহির করে আর ঢুকানো হয়। আমরা তারপরও বলি যে, আমাদেরকে ছেড়ে দেন আমরা এত রিস্ক নিতে চাই না। তারপরও নার্স বলে আমরাই পারব। আমার বোন প্রসব ব্যথাতে অনেক চিৎকার করতে তাকে। এরপর একটি ইনজেকশন দেয়। এই ইনজেকশন দেওয়ার পরে পরেই ব্যথা আরো বাড়তে থাকে। রাত একটার দিক বলে আল্লাহ আল্লাহ কর বাচ্চা হয়ে যাবে। আমরা সবাই আল্লাহ আল্লাহ করতেই থাকি এরপর বাচ্চা হয়ে গেল। আমরা দেখি বাচ্চার মুখে কি যেন পাইপ দিয়ে হাওয়া দেয়। তারপর পেটে ডলাডলি করতে থাকে। আমার বোন তারপর বুঝতে পারে যে আমার ছেলে হয়েছে কিন্তু কালো হয়ে যাচ্ছে। তারপর নার্স বল্ল গাড়ি ঠিক করেন দিনাজপুর নিয়ে যাইতে হবে। কিছুক্ষণ পর বলে যে তোমাদের মরা বাচ্চা বাইর হইছে। আমি দেখছিলাম বাচ্চাটি জীবিত ছিল আর পেটটা শুধু দুক দুক করছিল। আমার অভিযোগ হইল বাচ্চাটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা সঠিক বিচার চাই, আমার বোনের ক্ষতি করছে নার্সরা। আমি চাই এই নার্স যেন দিনাজপুর জেলায় না থাকে। আরো জানা যায়, এই হাসপাতালে শুরু থেকেই কোন ডাক্তার ছিল না। একজন নার্স ও একজন আয়া দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলেন, প্রসবের আগেই শিশু মারা যায়। আমরা এই অনাকাঙক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এই নার্সকে বদলি করলাম। কোথায় বদলি করানো হল এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আজ থেকে এই হাসপাতালে প্রসূতি মহিলাদের চেক আপ করানো হবে আপাততঃ কোন রকম ডেলিভারি সেবা দেওয়া বন্ধ থাকবে। পরবর্তীতে হাসপাতাল কতৃপক্ষ নবজাতক শিশুটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২০ আগস্ট ,২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here