দুদুকের অভিযানে কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসে নগদ অর্থসহ পাসপোর্টের স্লিপ জব্দ,  আটক-৩

0
353
শোভন শুভ : 
কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আজ দুপুরে দুদক অভিযান পরিচালনা করেছে, তিনজন দালালকে গ্রেপ্তার ও নগদ অর্থ সহ বিভিন্ন মানুষের অগ্রীম পাসপোর্ট করার কয়েকশো কাগজ উদ্ধার করেছে। পাসপোর্ট অফিসের মধ্যে আনসার সদস্যেদের থাকার ঘর। আনসারদের কাজ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা দেওয়া। তবে সেই কাজ ছেড়ে তারা পাসপোর্ট করতে আসা লোকজনকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ। দালালির কাজও করছেন অনেকে। এভাবে তারা প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছিলেন নগদ অর্থ।
গতকাল বুধবার তাদের থাকার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গেছে নগদ অর্থ। একই সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের সামনে কয়েকজন দালালের ঘরে অভিযান চালিয়ে মিলেছে নগদ অর্থসহ পাসপোর্ট করার নানা কাগজপত্র। অভিযোগ রয়েছে এই সব দালাল অফিসের আনসার থেকে শুরু করে এডি পর্যন্ত ম্যানেজ করে কাজ করে, তা না হলে দালালরা কিভাবে টাকার বিনিময়ে তারাতাড়ি কাজ করে দেয়!
দুপুর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে দুদকের অভিযান। এর পর বেরিয়ে আসে পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির নানা ফিরিস্তি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া ও সহকারি পরিচালক নীল কমল পালের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিন দালাল আটক করা হয়। পরে তাদের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নগদ অর্থ ও কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক জাকারিয়া বলেন, পাসপোর্ট অফিস ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলছিল। ভুক্তভোগীরা দুদকে অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তিনি বলেন, অভিযানে সহিদুল ইসলাম, রুবেল মিয়া ও মাহফুজ জামান নামে তিন আনসার সদস্যের বিছানা ও বাক্স থেকে ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, পাসপোর্ট অফিসের সামনের লিটন এন্টারপ্রাইজ থেকে ৩০ হাজার ৮০০ টাকা ও মহিবুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩০৭ টাকা পাওয়া গেছে। এসব অর্থের উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে অভিযানে তিন দালালকে আটক করেন দুদক সদস্যরা। তাদের মধ্যে মহিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার রহমানকে তিন মাস ও রিপনকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দবির উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগে দৈনিক আমার সময় পত্রিকার সাংবাদিক এ,জে, সুজন এই অফিসে সংবাদ সংগ্রহ কালে তাকে লাঞ্চিত ও তার মোবাইল ভেংগে ফেলে, এবং বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয় এর নজরে পরে, তারপরই আমরা এই অভিযানের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করি, আজকের অভিযানে আটক তিন দালাল অপরাধ স্বীকার করায় কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগে পাসপোর্ট অফিসে সাংবাদিক লাঞ্চনার শিকার হয়, তারপর জেলা প্রশাসকের অফিসে সাংবাদিকরা মানব বন্ধন করেন, এবং একাধিক পত্রিকা ও টেলিভিশনে তা প্রকাশ করা হয়, এর পর এ অভিযান পরিচালনা করা হলো।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৫ আগস্ট ,২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here