সাতক্ষীরায় দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সভাপতির গাত্রদাহ শুরু

0
343
মোঃ ইব্রাহিম খলিল:
সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কর্তৃক  নিয়োগ কেন্দ্রিক ৫৩ লক্ষ টাকা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এর প্রেক্ষিতে কলারোয়া উপজেলার মোঃ সোহাগ হোসেন এবং কামরুল ইসলাম নামে দুইজন সাংবাদিক কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বরাবর পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দেন। একপর্যায় ইউ,এন,ও ‘র হস্তক্ষেপে কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেন। প্রসঙ্গত, দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর চারটি সৃষ্ট পদের বিপরীতে বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবনে গত ১২ আগষ্ট শুক্রবার সকাল ০৯ ঘটিকায় নিয়োগ বোর্ড বসার কথা থাকলেও তা ভেস্তে যায়। নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হওয়ায় দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে কৌশলে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে এক বিশেষ ব্যক্তির কাছে সবক নিয়েছেন সাংবাদিকদের থামানোর জন্য। সে কারণে সাংবাদিকদের কে উদ্দেশ্য করে  বিভিন্ন জন মহলে মিথ্যা মামলার হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগে এই প্রতিবেদককে রীতিমতো দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ভাই জাহিদ ফারুক মুঠোফোনে আলাপকালে হুমকি ধামকি এমনকি পাগলের প্রলাপ বকেছেন। এত কিছু সত্ত্বেও প্রতিবেদককে স্তব্ধ করার নিমিত্তে সফলতা না আসায় ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছেন প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি। ইতি মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তাদের বিভিন্ন ফন্দিফিকিরের অংশ হিসেবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তদবিরে মরিয়া হয়ে উঠেছে নিয়োগ বোর্ড পুনরায় বসানোর পায়তারায়। জানা গেছে,  কলারোয়া উপজেলার দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ৪ টি সৃষ্ট পদ কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, আয়া, নৈশ প্রহরী ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ বোর্ডের পুর্বে প্রধান শিক্ষক এস, এম, আব্দুর রহিম এবং অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির  সভাপতির যোগসাজশে উৎকোচের বিনিময়ে চার জনকে মনোনীত করেন। তারা হলেন, কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাঁট গ্রামের আব্দুর রহমান এর ছেলে শাহিন কাদের কে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে প্রধান শিক্ষক ও  সভাপতি  ১৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। একই উপজেলার ঝাপাঘাঁট গ্রামের আব্দুর রশিদ এর ছেলে এবং উল্লেখিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের আপন ভাতিজা মোঃ মিল্টন হোসেন কে অফিস সহায়ক পদে ১৬ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। একই উপজেলার পাচপোতা গ্রামের মোঃ মনিরুজ্জামান এর স্ত্রী মোছাঃ তাসলিমা খাতুন কে আয়া পদে ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচ নেন। একই উপজেলার দামোদর কাটি গ্রামের শেখ মুনছুর আলীর ছেলে ও উল্লেখিত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ আব্দুল্লা (দুলু) এর আপন ভাতিজা শেখ শরিফুল ইসলাম কে নৈশ প্রহরী পদে ১২ লক্ষ টাকা উৎকোচ নেন প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি এ দাবি স্থানীয়দের। দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, কলারোয়া উপজেলার দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষক এস, এম আব্দুর রহিম  এবং অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ আব্দুল্লা (দলু) পরস্পর যোগসাজশে চতুর্থ শ্রেণীর চারটি সৃষ্ট পদে নিয়োগের পুর্বে চারজন প্রার্থীর নিকট থেকে ৫৩ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়ে তাদের কে মনোনীত করেন। তিনি আরও বলেন, ৪ টি সৃষ্ট পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরবর্তী সময় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির মধ্যে প্রার্থী ভাগাভাগি নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়াঝাটি হয়। শুধু তাই নয়?  সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ বোর্ডের জন্য ডিজির প্রতিনিধির নিকট চিঠি দিয়ে অনুমতি দেন। কিন্ত প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির ভাগাভাগি নিয়ে প্রায় দুই মাস নিয়োগ বোর্ড বসা নিয়ে ধ্রুর্মজাল সৃষ্টি হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। একপর্যায় একজন বিশেষ ব্যক্তির মধ্যস্থতায় তাদের দুজনের মধ্যে মিমাংসা হয়। খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর চারটি নিয়োগ পদের বিপরীতে মনোনীত করা চারজন প্রার্থীর মধ্যে দুই জন প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির আপন ভাতিজা। এ বিষয় কলারোয়া দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে চতুর্থ শ্রেণীর চারটি সৃষ্ট পদে নিয়োগের পুর্বে ৫৩ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। প্রার্থী ভাগাভাগি নিয়ে প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির ঝগড়াঝাটির কারণে নিয়োগ বোর্ড ২ মাস বিলম্ব হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ডিজির প্রতিনিধির ব্যস্ততার কারণে নিয়োগ বোর্ড বসতে কালক্ষেপন হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে অফিস সহায়ক পদে আবেদন কারী মোঃ মিল্টন হোসেন প্রধান শিক্ষকের আপন ভাতিজা কিনা জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয় কলারোয়া উপজেলার দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ আব্দুল্লা (দুলু) এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে চতুর্থ শ্রেণীর চারটি সৃষ্ট পদে নিয়োগের পুর্বে চারজন প্রার্থীর নিকট থেকে ৫৩ লক্ষ টাকা উৎকোচ নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। প্রার্থী ভাগাভাগি নিয়ে সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক এর মধ্যে ঝগড়ার  কারণে নিয়োগ বোর্ড বসতে কালক্ষেপন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ডিজির প্রতিনিধি কেন দুই মাস নিয়োগ বোর্ড বসাতে কালক্ষেপণ করেছে তা আমি জানিনা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নৈশ প্রহরী পদে শেখ শরিফুল ইসলাম সভাপতির আপন ভাতিজা কিনা জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৫ আগস্ট ,২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here