মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় কাবুল খান হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

0
585
মো: মহিদ:
মানিকগঞ্জে কাবুল খান হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লব হোসেনকে (৫০) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম বদল করেছিলেন। এছাড়া ঘন ঘন পেশাও পরিবর্তন করতেন। বিপ্লব হোসেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা গড়পাড়া ইউনিয়নের পাঞ্জনখাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকার মিরপুরের ৬০ ফিট ভাঙা ব্রিজ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। র‍্যাব ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধের জের ধরে জেলা সদরের গড়পাড়া ঘোষের বাজার এলাকায় বিপ্লব ও তার সহযোগীরা এলাকার মোতালেব হোসেনের বাড়িতে ধারালো অস্ত্রসহ হামলা চালায়। তখন মোতালেব বাড়িতে ছিলেন না। ক্ষুব্ধ হয়ে তার বাড়ির সামনে কাবুল খানকে পেয়ে কুপিয়ে জখম করে ফেলে যান তারা।  স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরদিন মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় বিপ্লবসহ কয়েকজন আসামীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামি বিপ্লব, মনির চৌধুরী, নিপ্পাই, মোশারফ হোসেন, সুনীল, উজ্জল ও শহীদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এর ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ৭ আগস্ট ২০০৯ সালে আদালত আসামি বিপ্লব হোসেন ও মনির চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং নিপ্পাই, মোশারফ, সুনীল, উজ্জ্বল ও শহীদুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি ছয় আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর মনির, উজ্জ্বল ও মোশারফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করলে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ সাত আসামিকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। উজ্জ্বল উচ্চ আদালতে আপিল করলে মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেন বিচারক। প্রায় চার বছর আগে গ্রেফতার আসামি মোশারফ কারাগারে মারা যান। মনির বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকেই আসামি বিপ্লব পলাতক। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জাতীয় পরিচয়পত্রে মা-বাবার নাম ঠিক রেখে নিজের নাম পাল্টে শহিদুল ইসলাম ব্যবহার করতেন। এছাড়া ক্রমাগত পেশা পরিবর্তন করে আসছিলেন তিনি। প্রথমদিকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দোকানের কর্মচারী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এবং পরবর্তী সময়ে পরিবেশ অধিদফতরের আগারগাঁও অফিসে প্রতারণামূলক দালালির কাজ করতেন। আজ সকালে তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here