মাসফি আকন্দ :
কলেজ পড়ুয়া একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে জর্জরিত হয়ে ৪৮ দিন পর প্রবাসী বাবা ও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের বাঁশদাইড় গ্রামে। ৪৮ দিন আগে ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে কলেজ জীবন সম্পন্ন করা মেধাবী ছাত্র ফারুক ( ২০) স্ট্রোক করে মারা যায়। ছেলে মারা যাওয়ার তিনদিন পর বাবা সৌদি প্রবাসী ফজলুল হক দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পর তিনি একমাত্র আদরের ছেলেকে হারিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এক প্রকার পাগল প্রায় হয়ে যান। ছেলের কবরের পাশে শুয়ে থাকতেন আর কান্না করতেন। জানা যায়,টানা ৪৫ দিন তিনি ছেলের কবরের পাশে শুয়ে থেকে কান্নাকাটি করতেন আর বিলাপ করতেন। গতকাল সন্ধার আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জামালপুরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরিক্ষা নিরিক্ষা শেষে জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি স্ট্রোক করে মারা যান। তার মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছেলের শোকে বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকলকে নাড়া দিয়েছে। নিকটতম প্রতিবেশী জুয়েল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন,ছেলের মৃত্যুর ৩ দিন পর সৌদি হতে নিজ দেশে চলে আসেন ফজলুল হক,একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছে সে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল। ছেলের কবরের পাশে সবসময় শুয়ে থাকতো কান্না করতো আর বলতো বাবা আমারে ছেড়ে কেন তুই চলে গেলি। বাবা তুই ফিরে আয়। তিনি আরো বলেন,ছেলে ফারুক আনন্দ মোহন কলেজ ময়মনসিংহ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিল। তার মৃত্যুর দিন তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভতি পরিক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। সে খুবই মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। এদিকে ছেলের শোকে তার বাবা ও চলে গেল। এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন আদারভিটা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ সুজন পারভেজ জানান,ছেলের মৃত্যুর পর ছেলের জন্যই প্রবাস থেকে চলে আসেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে তিনিও মারা গেলেন। আজ সকাল ১১টায় ছেলের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।