রিপন সারওয়ার:
ঢাকের তালে হৃদয় নাচাতে আসছে শারর্দীয় দূর্গোৎসব। পূজার মুল আকর্ষণ ঢাক ঢোল।। যাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় হয়ে উঠে প্রাণবন্ত সেই ঢাক কারিগরদের হৃদয়ে নেই খুশির আমেজ।
ছেলেটা আজই প্রথম পা রাখলো স্কুলে। জানিনা কতদিন ধরে রাখতে পারবো বাপ-দাদার এই পেশা। আর ব্যবসার যা অবস্থা ছেলে এই ব্যবসায় আসবে কিনা তাও বলতে পারছিনা। আর মেয়েটা নবম শ্রেণীতে পড়ে খুব টানা পোড়োনের মধ্যে দিয়েই দিন কাটাচ্ছি।
বংশ পরম্পরায় পাওয়া ব্যবসার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথাই বলছিলেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঢাক ঢোলের কারিগর নরেশ দাস।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ৭ নং ঘোগা ইউনিয়নের পারুলিতলা গ্রামের ব্রজেন দাসের ছেলে নরেশ দাস ( ৩৫ ) প্রায় ১৭ বছরের অধিক সময় ঐতিহ্যগত ভাবেই ধরে রেখেছেন ঢাক ঢোল তৈরি ও মেরামতের পেশা।
এবার মুক্তাগাছায় সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের ১১২ টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে একমাত্র মহিলা উদ্যোক্তাদের মাতৃ সংঘ মন্ডপটি।
বাদ্যযন্ত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্পিরা চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকে এই দিনটির জন্য। সারা বছর তেমন কোন কাজ না থাকলেও এসময় ব্যস্ততম সময় কাটান নরেশ দাশ তবে এ বছরের চিত্রটা একটু ভিন্ন। দুর্গাপূজা সামনে রেখে শেষ সময়েও তেমন কোন কাজ নেই হাতে। এতে কপালে চিন্তার ভাজসহ ভবিষ্যৎ ব্যবসা নিয়ে শঙ্কিত নরেশ দাস।ঢাক ঢোল, কাশি, ঘন্টা, শঙ্খ দুর্গাপূজার অপরিহার্য হিন্দু শাস্ত্রেও এর ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে ঢাক-ঢোল ছাড়া পূজা অচর্ণার কথা ভাবাই যায় না তবে বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় কমে যাচ্ছে ঢাক ঢোলের কদর।
নরেশ দাস আলোকিত প্রতিদিন কে জানান, এখন ঢাক ঢোলের যে দুই একটা কাজ হয় তাতে কাঠ চামড়াসহ ঢাক ঢোল তৈরির বিভিন্ন উপকরণের মুল্য বৃদ্ধির জন্য লাভের মুখ দেখা কষ্ট হয়ে যায়। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ঢাক ঢোল, তবলা, খোল এর ব্যবহার। পূজা আসলেই এগুলোর একটু চাহিদা বাড়ে।
ছোট ঢাক ১৩০০০ হাজার টাকা এবং বড় ঢাক ১৫০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করি আর মেরামতের জন্য কাজের ধরণ দেখে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা নেই। পূজা শেষে বছরের বাকি দিন গুলোতে সংসার চলে বিয়ে, কীর্তনে খোল ও কর্ণেড বাজানোর ভাড়ায় টাকায়।