ইউক্রেনে পাওয়ার গ্রিডে রাশিয়ার হামলা, ১৫ লাখের বেশি মানুষ অন্ধকারে

0
198

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে। আরও কয়েকটি পাওয়ার গ্রিডে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।  ২২ অক্টোবর শনিবার রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ কিয়েভের। পাওয়ার গ্রিডে হামলার কারণে দেশটির ১৫ লাখ মানুষ অন্ধকারে রয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ভয়াবহ আকারে রুশ হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার সক্ষমতায় তার দেশ আরও উন্নতি করবে।জেলেনস্কি বলেন, এই গণ-হামলার পরিসর খুব বিস্তৃত। পশ্চিম, মধ্য এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোতে এই হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, অবশ্যই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং হামলাকারী ড্রোন শতভাগ ভূপাতিত করার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তাদের নেই। তিনি নিশ্চিত যে, ধীরে ধীরে অংশীদারদের সাহায্যে এ সক্ষমতা অর্জন করবেন।

তিনি বলেন, শনিবার ইউক্রেন বাহিনী ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০টিরও বেশি ইরানের তৈরি শহীদ-১৩৬ ড্রোন ভূপাতিত করেছে। বিমানবাহিনীর কমান্ড এর আগে বলেন যে ইউক্রেনে ৩৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, ১৮টি গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

যুদ্ধের নবম মাস শুরু হতে যাচ্ছে এবং শীতকাল ঘনিয়ে আসছে, এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিডে আক্রমণ করায় আরও দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এদিকে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসন থেকে বেসামরিক নাগরিকদের অন্যত্র যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ-সমর্থিত নেতারা।  ২২ অক্টোবর শনিবার টেলিগ্রাম অ্যাপে এক বার্তায় আঞ্চলিক প্রশাসন জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের খেরসন শহর ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি, ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা ও পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়

ইউক্রেনে পাওয়ার গ্রিডে রাশিয়ার হামলা, অন্ধকারে ১৫ লাখ মানুষওই বার্তায়।  রাশিয়া যুদ্ধের প্রথম দিকে আঞ্চলিক রাজধানী শহর খেরসন দখল করে নেয় এবং পরবর্তীতে এই অঞ্চলের অন্যান্য অংশও দখল করে তারা। খেরসনসহ চারটি অঞ্চল গণভোটের মাধ্যমে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিন সরকার। বৃহস্পতিবার, তিনি ইউক্রেনীয় বাহিনীর ক্রমাগত পাল্টা আক্রমণে মধ্যে অঞ্চলগুলোতে সামরিক আইন ঘোষণা করেন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে যে তারা এই অঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে, অন্তত দুটি গ্রাম দখল করে নিয়েছে তারা। সেখান থেকে সরে গেছে রুশ সেনারা। খেরসন ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে, যা ২০১৪ সালে রাশিয়া দখলে নেয়। রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু করেছে। এসব হামলা অন্তত অর্ধেক তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং পুরো সিস্টেমের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি করেছে। প্রকৌশলীরা নেটওয়ার্ক পুনরুদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। শনিবার বিভিন্ন অঞ্চলের কর্মকর্তারা জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ওপর ধর্মঘটের কথা জানিয়েছেন। আঞ্চলিক গভর্নররা বাসিন্দাদের পানি মজুত করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা কিরিলো টিমোশেঙ্কো বলেছেন, কিয়েভের কিছু অংশ সন্ধ্যার মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শহরের এক কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন যে ইউক্রেনের রাজধানীকে ‘বেশ কয়েক দিন বা সপ্তাহ’ বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ছাড়াই চলতে হতে পারে। অন্তত ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশটিতে মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন যে মস্কো এই হামলার মাধ্যমে ইউরোপে উদ্বাস্তুদের একটি নতুন ঢেউ তৈরি করতে চায়। অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা টুইটারে বলেছেন যে হামলা গণহত্যার সামিল।

মস্কো জ্বালানি অবকাঠামোকে টার্গেট করার কথা স্বীকার করলেও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করেছে।

সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ অক্টোবর-২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here