আবু সায়েম:
“বর্জের পরিশোধন নিশ্চিত হবে টেকসই স্যানিটেশন”হাতের পরিচ্ছন্নতায় এসো সবে এক হই” এই প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর -২০২২ ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস -২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক যৌথ উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসন চত্ত্বর থেকে র্যালি করে শহীদ মিনার হয়ে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ। এরপর হাত ধোয়া প্রদর্শনীতে হাত ধোয়ার কৌশল পর্যবেক্ষণের পর জেলা প্রশাসক চত্ত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, এই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হলো সকলে নিরাপদ পানি পান করে সুস্থ ও সবল থাকা এবং নিয়মিত নির্দেশনা মোতাবেক হাত ধোয়া । তিনি আরো বলেন,কক্সবাজার জেলার প্রতিটি স্কুলে যেন প্রতিমাসে ছাত্র ছাত্রীদের হাত ধোয়ার সঠিক কৌশল সম্পর্কে ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে।তাহলে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ছাত্রছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারে। ছাত্রছাত্রীরা সচেতন হলে তাদের পরিবার ও সচেতন হবে ।
সভাপতির বক্তব্যে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সরকারি এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখা।পয়নিস্কাশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার ও নিরাপদ পানি ব্যবহারের জন্য মানুষকে লিফলেট, ফেষ্টুন, গণসচেতনতামুলক শিক্ষণীয় নাটক ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বার্তা দিয়ে মল ও পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তির জন্য সচেতন করা। দিবসটি বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি এবং উদ্বুদ্ধকরণের জন্য একটি প্রচারণামূলক দিবস।সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বৈশ্বিক ও স্থানীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের জন্য বিশ্ব হাত ধোয়া অংশীদার বা জিএইচপি (পূর্বে এর নাম ছিল ‘হাত ধোয়ার জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব’) ২০০৮ সালে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস চালু করে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল মনজুর বলেন,সাধারণ মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীরা যাতে সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার কৌশল সম্পর্কে অবগত হতে পারে সেজন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজারের উদ্যোগে বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত ছাত্রছাত্রীদের হাত ধোয়ার নিয়ম প্রদর্শন করা হয়। ৩০ টি ব্যাসিনের মাধ্যমে সবাই কে সঠিক হাত ধোয়ার কৌশল সম্পর্কে অবগত করা হয়।এমনকি অতিথিরাও সঠিকভাবে হাত ধোয়ার কৌশল সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে প্রদর্শন করেন।
তিনি আরো বলেন, দৈনন্দিন জীবনে আমরা আমাদের হাত দিয়ে অসংখ্য কাজ করে থাকি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের হাত অসংখ্য জীবাণুর সংস্পর্শে আসে, যার ফলে নানা রোগ হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মল হচ্ছে ডায়রিয়ার জীবাণুর প্রধান উৎস। এদিকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারে শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধ হয় শতকরা ৩২ ভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষায় ৩২ ভাগ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে ২৫ ভাগ আর সঠিক নিয়মে হাত ধুলে ৪৪ ভাগ। অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার অভ্যাস একটি ভালো ভ্যাকসিনের চেয়েও বেশি কাজ করে। শুধু খাবার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার অভ্যাস সহজেই এ সব রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল মনজুর এবং ইউনিসেফের ওয়াশ অফিসার সাজেদা বেগমের যৌথ সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, ইউনিসেফের ওয়াশ ম্যানেজার বিষ্ণু পোখরেলসহ কক্সবাজার ওয়াশ সেক্টরের বিভিন্ন এনজিওকর্মী,বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।