মুন্সিগঞ্জে ভাঙন আতঙ্কে তালতলা-ডহুরী নদী তীরের বাসিন্দারা  

0
318

মোঃ আহসানুল ইসলাম আমিন: 

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের কাইলচাইল এবং সূবচনী বাজার এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা । তারা জানান, অব্যাহত নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়ছে নদী তীরের বাসিন্দারা। বেশ কয়েকদিনে ৩০টিও অধিক বাড়ীতে ভাঙন। পাশাপাশি বহু মানুষের বসতবাড়ী ও ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর তীরের মাটি কেটে বিক্রি এবং নদী হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রশাসন বালু ব্যবসায়ী এবং মাটি কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরও নদী হতে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি রাতের আঁধারে নদীর তীরের ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রলারযোগে নিয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন নদীর তীরের বাসিন্দারা। জানাগেছে, লৌহজংয়ের পদ্মা নদীর সাথে সংযুক্ত এই নদীটি তালতলা – ডহুরী খাল বা পদ্মার শাখা নদী হিসেবে পরিচিত। বর্ষার সময়ে নদীতে অনিয়ন্ত্রত নৌযান চলাচল ও তীব্র স্রোতের কারণে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সুবচনী, কাইলচাইলে ভাঙন দেখা দেয়। বহু মানুষের বেতকা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া নদী তীরের বসতবাড়ী ভেঙে যায়।

এছাড়াও সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর, ফেগনাসার ও বাড়ৈপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। বর্ষার সময় চলে গেছে এই সময়ে নদী ভাঙনের কথা নয়। নদীর তীরের জমির মাটি কেটে নেয়া ও নদী হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। পদ্মার সাথে সংযুক্ত এই নদীটিতে সব সময় তীব্র স্রোত থাকে। কালের বিবর্তনে নদীটি প্রসস্ততা আগের চেয়ে প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। নদীটির প্রস্তুত অনুযায়ী যে পরিমান নৌযান চলাচল করার কথা তার চেয়ে শতগুন পরিমান মালবাহী জাহাজ, কার্গোর্সহ বিভিন্ন ধরনের বড় বড় নৌযান চলাচল করে। যে কারণে নদীর তীরের জমি ও বসতবাড়ীগুলো নদীতে ভেঙে পড়ছে।

বর্ষার সময়ে নদীতে অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ চলাচল ও অবৈধ ড্রেজিং এর কারণে নদী ভাঙনের মুখে পড়ে নদীর তীরের বাসিন্দারা। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও কিছুদিন পর আবারও বালু দস্যুরা নদী থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন। যার কারণে নদী ভাঙন হতে রক্ষা পাচ্ছেনা এসব এলাকার মানুষ। নদী ভাঙন রোধে অবৈধভাবে নদী হতে বালু জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাঃ রাসেদুজ্জামান বলেন, চলতি সাপ্তাহে সিরাজদিখান এবং টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সাথে যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করেছি। একটি ড্রেজারকে জরিমানা করা হয়েছে। বাকীগুলো দ্রুত পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা স্থানীয়দের বলে আসছি কেউ যদি বালু উত্তোলন কিংবা মাটি কেটে নদী ভাঙনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সাথে সাথে আমাদেরকে খবর দেয়। নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ অক্টোবর-২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here