ধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

0
222

মাসফি আকন্দ:

জামালপুর সদর উপজেলা এবং মেলান্দহ উপজেলার বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতে দেখা দিয়েছে পোকা ও ইঁদুরের আক্রমণ। পোকার আক্রমণে কালচে রঙ ধারণ করছে ধানের শীষগুলো। ক্ষেতে একাধিকবার বিষ প্রয়োগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষক। তবে কৃষকদের সহায়তায় উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বছরের এই মৌসুমে ধান চাষ করে সারা বছরের খাবারের যোগান নিশ্চিত করে থাকেন জামালপুরের কৃষক। কিন্তু জামালপুর সদর উপজেলাসহ সাত উপজেলার বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতে দেখা দিয়েছে পোকা এবং ইঁদুরের আক্রমণ। পোকার আক্রমনে লাল রঙ আবার কোথাও কালচে রং ধারণ করছে ধানের শীষগুলো। অনেক জায়গায় চিটা হয়ে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। কৃষকরা বলছেন, প্রায় এক মাস আগে ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিলে বিষ প্রয়োগ করে কিছুটা রেহাই পান তারা। কিন্তু এবার পাতা মোড়ানো পোকা, কারেন্ট পোকাসহ বেশ কয়েকটি পোকার আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। পোকার আক্রমণে ফসল কোথাও লাল রং আবার কোথাও কালচে রঙ ধারণ করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিন্দন্দের পাড় এলাকার কৃষক নিপুন মিয়া জানান, তার ক্ষেতের প্রায় অর্ধেক ধান নষ্ট করেছে কারেন্ট পোকা (বাদামি ঘাস ফড়িং)। কিন্তু কৃষি বিভাগের কোনো ধরনের সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন না। এমনকি ফোন করা হলেও কৃষি বিভাগ তাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে না।কৃষক ফজলুল হক বলেন, প্রায় একমাস থেকে ক্ষেতে পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। বিষ দেয়ার পরে আক্রমণের মাত্রা একটু কমে আসে। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারও পোকার আক্রমণ শুরু হয়। এই পোকার আক্রমণে ক্ষেতের প্রায় অর্ধেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

চরপলিশা গ্রামের কৃষক মিজানুল রহমান বলেন, ‘আমার ৪০ শতাংশ জমির ধানে কারেন্ট পোকা (বাদামি ঘাস ফড়িং) যখন আক্রমণ করে তখন আমি একে একে তিনবার বিষ প্রয়োগ করি। কিন্তু কোনো কাজে আসে নাই। এখন এই পোকার আক্রমণে আমাদের এই সর্ম্পূণ চরের কৃষক এখন দিশেহারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কৃষি বিভাগের কোনো লোক আমাদের খোঁজ খবর নিতে আসে নাই।’

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা জানান, আমন ধানে এই সময় পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। কৃষক যেন নিরাপদে ফসল তুলতে পারে, সে জন্য উপজেলায় টিম গঠন করে সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন করে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, এ বছর জেলার ১ লাখ ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর রোপা আমন আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৯ নভেম্বর-২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here