সুন্দরবনের অবিস্মরণীয় কৃতী মসজিদকুড় মসজিদ অনন্য স্থাপত্য

0
273

প্রতিনিধি,কয়রা (খুলনা):

খুলনা মহানগরী থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার প্রাচীন ইউনিয়ন আমাদি। তারই ধারাবাহিকতায় কপোতাক্ষ নদের ঠিক পূর্বপাড়ের এই আমাদী ইউনিয়নের মসজিদকুড় গ্রামকে ইতিহাস প্রসিদ্ধ করে তুলেছে মসজিদকুড় মসজিদ।

ইট, সুড়কির নির্মিত মসজিদটি দক্ষিণ বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্ন সম্পদ। এই মসজিদকুড় মসজিদটির কোন শিলালিপি পাওয়া যায়নি ,তবে বাগেরহাট ষাট গম্বুজ মসজিদ ও এই মসজিদকুড়ের নয় গম্বুজ মসজিদের গঠণ প্রণালী এবং স্থাপত্যের সাদৃশ্য থাকাতে এটি খানজাহান আলী (রহ) কর্তৃক নির্মিত বা তার সমসাময়িক বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়রার আমাদীর এই  মসজিদকুড় মসজিদের সাথে বাগেরহাটের খান জাহান আলী (রহ) নির্মিত ইমারত গুলোর নকশার মিল রয়েছে। প্রাচীন মসজিদ হিসেবে এর নির্মাণ শৈলী বেশ চমৎকার ও আকর্ষণীয়। তাছাড়া স্থাপনা শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত।  মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতত্ত্ব  বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে ,১৪১৮- ১৪৩২ খ্রিস্টাব্দে গৌড়ের সুলতান ছিলেন জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ শাহ। এই সময় হযরত খানজাহান আলী (রহ) দক্ষিণ অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন, এবং এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। একজন প্রবীণ ব্যক্তি প্রতিনিধিকে বলেন, একসময় মসজিদটি কপোতাক্ষের বন্যার পানিতে ডুবে ছিল। এ অঞ্চল বন জঙ্গলে ভরা ছিল।জীব জন্তুর ভয়ে মানুষ মসজিদের মধ্যে প্রবেশ করতে সাহস করত না।

মসজিদটির পাশের মাপ ১৬ দশমিক ৭৬ মিটার ভিতরের মাপ ১২ দশমিক ১৯ মিটার। কিবলামুখী দেয়ালে অর্ধবৃত্ত মিহরাব তৈরি করা হয়েছে। মাঝের মিহরাব অপেক্ষাকৃত বড়। মসজিদটির ভিতরে ৪ টি স্তম্ভের উপর ছাদ ভর করে আছে। মসজিদটি একসময় টেরাকোটা দিয়ে সজ্জিত ছিল ।এগুলো অনেকটা নষ্ট হয়ে পড়েছে। মসজিদটির বাহিরের দেয়াল দক্ষিণ পূর্ব ও উত্তর দিকে পোড়া মাটির চিত্র ফলক দ্বারা অলঙ্কৃত ছিল। অলঙ্কৃতের মধ্যে রয়েছে পদ্মফুল,মালা, বিলম্বিত রজ্জু, ও ঘন্টা সহ বিভিন্ন প্রতিকৃতি। সংস্কারের অভাবে এটি দিনে দিনে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। প্রতিদিন দেশি বিদেশি অনেকেই নিদর্শণটি দেখতে আসেন।

স্থানীয়রা বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে, মসজিদটির সৌন্দর্য দিনে দিনে নষ্ট হতে চলেছে। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ পুরো মসজিদটিকে একটি কমপ্লেক্স হিসেবে গড়তে পারলে আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠত।  স্থানীয় প্রতিনিধি ,সরকারের প্রতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালনার সুদৃষ্টি থাকলে এটি আরো আকর্ষণীয় ,ও সৌন্দর্য স্মৃতিশীল পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠত।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর-২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here