খালেদা জিয়া মুক্ত, উনি বাসায় আছেন, জামিন দেওয়ার কী আছে: আইনমন্ত্রী

0
211

আলোকিত ডেস্ক:

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি নেতারা বক্তব্যে বলেন ওনাকে (খালেদা জিয়া) জামিন দিতে হবে। কিন্তু উনি তো মুক্ত। উনি বাসায় আছেন। প্রায়ই চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। আবার বাসায় ফিরে আসেন। উনাকে জামিন দেওয়ার কী আছে?

১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার  রাত সাড়ে ৯টায় নারায়ণগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা বার ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, উনারা বলছেন উনাকে দিয়ে ডিসেম্বরের ১০ তারিখে বক্তব্য দেওয়াবেন। যেই দুইটা শর্ত দেওয়া হয়েছে- সেখানে কিন্তু এমন শর্ত দেওয়া নাই যে, উনি রাজনীতি করতে পারবেন না। কিন্তু উনাদের আবেদনে স্পষ্ট লেখা ছিল, উনার শারীরিক অবস্থা এতোটাই খারাপ যে, তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। শিগগিরই তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। তাহলে ১০ তারিখে বেগম খালেদা জিয়া যদি প্রোগ্রামে যান, তাহলে ওই যে দরখাস্তে লেখা ছিল সেটা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে না?

আনিসুল হক বলেন, আপনারা সবাই কোর্ট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের নাম শুনেছেন, ৪০১ ধারার নাম ‍শুনেছেন। খালেদা জিয়া ২০০৭ ও ২০০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তখন তার বিরুদ্ধে দুই এর অধিক দুর্নীতির মামলা করা হয়। তদন্ত করা হয়, এফআইআর হয়, চার্জশিট হয়।  তিনি বলেন, প্রত্যেক বার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালতে ফাইভ সিক্সটি ওয়ান এ বলেন, রিভিশন বলেন, যত আদালত আছে অ্যাপিলেট ডিভিশন পর্যন্ত গেছেন, এই মামলা শেষ করার জন্য। অথচ অ্যাপিলেড ডিভিশন বলে দিয়েছেন, ‘মামলা শেষ করা যাবে না, বিচারিক আদালতে গিয়ে বিচার হতে হবে। মামলায় বিচারিক আদালতে বিচার হয়েছে, সাজা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তার পরিবার থেকে দরখাস্ত করা হয়েছে তার শরীর খারাপ, অত্যন্ত শরীর খারাপ। তাকে যে কোনও আইনি প্রক্রিয়ায় ছাড়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মহানুভবতায় ৪০১ ধারায় দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন। অথচ আমি এখনও শুনি, বিএনপি নেতারা বলে তাকে (খালেদা জিয়া) বেইল (জামিন) দিতে হবে। আপনারা বলেন মুক্ত মানুষকে কোর্ট কিভাবে বেইল দেয়। এটা তো অন্টিসিপাটরি বেইল না, তাকে তো জেল থেকে অলরেডি বের করে দেওয়া হয়েছে। তাকে আবার বেইল দেওয়ার কি আছে?

ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে যারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তারা সোচ্চার। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল, হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে হত্যা করা। আজকে কিন্তু আবারও জননেত্রী শেখ হাসিনার সেবামূলক সরকারের কারণে যে উন্নয়ন হয়েছে, বাংলাদেশ যে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে সেটাকে নষ্ট করার জন্য বাংলাদেশেকে আবারও কোনও অপশক্তির কলোনিয়াল স্টেট বানানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। তার মধ্যে অনেক কিছু থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা সেই আইনের শাসন আমাদের পুরস্কার দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ২৬ সেপ্টেম্বর হচ্ছে সেই কালো দিন যখন ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স দেওয়া হয়। সেই ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে বলা হলো, বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের যে খুন করা হয়েছে তার বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হতে পারবে না, বাংলাদেশের কোনও আদালতে হতে পারবে না। যারা খুন করেছে তারা কোন কোর্টের আইনের আওতায় আসবে না। দীর্ঘ ২১ বছর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পাই নাই। বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলা করতে হয়েছে ১৯৯৬ সালে ২রা অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর কন্যা ক্ষমতায় আসার পরে।

আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারোয়ার প্রমুখ।

আলোকিত প্রতিদিন/ ০২ডিসেম্বর- ২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here